সাইফুল ইসলাম রিয়াদঃ নোয়াখালীর চাটখিল উপজেলায় সুন্দরপুর এলাকায় ব্যাটারিচালিত রিকশাচালক আব্দুস সাত্তারকে (৩৫) ছুরিকাঘাতে হত্যার ঘটনায় আরও একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ নিয়ে হত্যায় জড়িত দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। হত্যায় ব্যবহৃত একটি ছুরি উদ্ধার করা হয়েছে।

শুক্রবার বিকালে খাগড়াছড়ি জেলার মানিকছড়ি উপজেলা থেকে অন্তরকে (২২) গ্রেপ্তার করে। এর আগে বৃহস্পতিবার ভোরে চাটখিল পৌরসভার সুন্দরপুর গ্রাম থেকে মোহনকে (২২) গ্রেপ্তার করা হয়। মোহনের জবানবন্দি রেকর্ড করেছেন আদালতের বিচারিক হাকিম সোয়েব উদ্দিন।

পুলিশ জানায়, গ্রেপ্তারের পর ১৬৪ ধারায় ছুরিকাঘাতে রিকশাচালক আব্দুস সাত্তারকে হত্যার কথা স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছে মোহন। মোহনের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ও মুঠোফোনে প্রযুক্তি ব্যবহার করে অপর খুনি অন্তরকে মানিকছড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাকে নিয়ে অভিযান চালিয়ে শুক্রবার বিকাল ৫টার দিকে একটি খাল থেকে হত্যায় ব্যবহৃত ছুরিটি উদ্ধার করা হয়েছে।

জানা গেছে, গত মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে চাটখিল পৌরসভার ২ নং ওয়ার্ডের চাটখিল-দল্টা সড়কের সুন্দরপুর মহল্লার ইউছুফ আলী তফদার বাড়ির সামনের সড়ক থেকে ছুরিকাঘাতে রক্তাক্ত আব্দুস সাত্তারের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় নিহত আব্দুস সাত্তারের ছোটভাই নোয়াখালী সদর উপজেলা আন্ডাচর গ্রামের বাসিন্দা জামাল উদ্দিন বাদী হয়ে বুধবার সকালে চাটখিল থানায় অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা করেন।

পরে নারীদের ব্যবহৃত একটি ওড়নার সূত্র ধরে বৃহস্পতিবার ভোরে চাটখিল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) দুলাল মিয়া পুলিশ নিয়ে সুন্দরপুর এলাকায় মোহনের বাড়ি থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে। থানায় এনে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মোহন রিকশাচালক আব্দুস সাত্তারকে তার এক সহযোগীসহ ছুরিকাঘাতে হত্যা করে বলে স্বীকার করে।

এরপর বৃহস্পতিবার বিকালে আদালতে হাজির করলে মোহন জানায় রিকশাচালক আব্দুস সাত্তারের রিকশায় ইয়াবা ট্যাবলেট বহন করছে। এমন খবর পেয়ে মোহন ও তার এক সহযোগী রিকশাটি ভাড়া নিয়ে সুন্দরপুর মহল্লার ইউছুফ আলী তফদার বাড়ির সামনে যাওয়ার পর নির্জন স্থানে আব্দুস সাত্তারের কাছে মোহন ও তার সহযোগী ইয়াবা চায়। এ নিয়ে মোহনের সাথে আব্দুস সাত্তারের সাথে কথা কাটাকাটি ও ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে মোহনের গলায় থাকা নারীদের একটি ওড়না ধরে রিকশাচালক টান দিলে ক্ষিপ্ত হয়ে মোহন তাকে ছুরিকাঘাত করে। এতে ঘটনাস্থলেই আব্দুস সাত্তার নিহত হলে তারা পালিয়ে যায়। লাশের পাশে ওড়নাটি পড়ে ছিল।

চাটখিল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ারুল ইসলাম জানান, হত্যার দিন সন্ধ্যায় মোহন শার্টের ওপর নারীদের ওড়না পরে অন্তরকে নিয়ে স্থানীয় একটি চা দোকানে বসে আড্ডা দিচ্ছিল। ওই ঘটনার সূত্র ধরে বৃহস্পতিবার ভোরে মোহনকে পাশের বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার ও পরে জিজ্ঞাসাবাদে সে হত্যায় নিজে ও অন্তরের সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করে। এরপর প্রযুক্তি ব্যবহার করে অন্তরের অবস্থান সম্পর্কে নিশ্চিত হয়ে খাগড়াছড়ির মানিকছড়ি উপজেলায় শুক্রবার অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার দেওয়া তথ্যেরভিত্তিতে হত্যায় ব্যবহৃত ছুরিটিও উদ্ধার করা হয়।