নোয়াখালীর বার্তাঃ গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মহামান্য রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেছেন, জাতিগঠনে বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্ব অপরিসীম। বিশ্ববিদ্যালয়ে কেবল পুথিগত বিদ্যা প্রদান করে না, শিক্ষার্থীদের অতীতের সাথে বর্তমানের যোগসূত্র ঘটায়।

তাদের সমকালীন আর্থ-সামাজিক-রাজনৈতিক বিষয়ে সচেতন করে তোলে এবং বিশ্বনাগরিকে পরিণত করে।
আজ রবিবার বিকেলে নোয়াখালী বিজ্ঞান প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে দ্বিতীয় সমাবর্তন অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

রাষ্ট্রপতি বলেন, উচ্চ শিক্ষা প্রসারে বিজ্ঞান ও তথ্য প্রযুক্তি ভিত্তিক মেধাবী ও দক্ষ সমাজ গঠনের লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। এ লক্ষ্য বাস্তবায়নে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিকে অগ্রাধিকার দিয়ে নতুন নতুন জ্ঞানের ক্ষেত্র ও বিষয়ে কার্যকর, প্রাসঙ্গিক ও ব্যবহারিক পাঠ্যক্রম প্রণয়ন করতে হবে। তোমাদের ইতিবাচক কর্ম, মেধা, প্রজ্ঞা, পরিশ্রম ও স্বদেশপ্রীতি দিয়ে তোমরাই গড়ে আধুনিক বাংলাদেশ।

অনুষ্ঠানে সমাবর্তন বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন একুশে পদকপ্রাপ্ত অধ্যাপক ও বিশিষ্ট সমাজবিজ্ঞানী ড. অনুপম সেন। স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. এম অহিদুজ্জামান, বিশেষ অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন শিক্ষা মন্ত্রী ডা. দীপুমনি এবং ধন্যবাদ বক্তব্য প্রদান করেন নোবিপ্রবি কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ফারুক উদ্দিন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন বিশ্ববিদ্যালয় এর রেজিস্টার অধ্যাপক মোহাম্মদ মমিনুল হক ও ইংরেজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মৌসুমি আক্তার।

বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য বলেন, আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের প্রতিটি খাতে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে।

উন্নয়ন ও অগ্রগতির এ ধারাকে অব্যাহত রাখতে সঠিক ও যোগ্য নেতৃত্বের বিকল্প নেই। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে আমরা স্বাধীনতা পেয়েছি। আর তারই সুযোগ্য কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ উন্নয়নের অভিষ্ট লক্ষ্যে এগিয়ে যাচ্ছে। আর এ নেতৃত্ব বিকাশের আদর্শ স্থান হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়।
তিনি আরো বলেন, আনুষ্ঠানিকভাবে শিক্ষা জীবনের অর্জিত জ্ঞান ও মেধা নিয়ে কর্মজীবনের পথে পা বাড়াবে। মনে রাখবে, ব্যক্তি তার কর্মের মাধ্যমে নিজ, পরিবার, সমাজ তথা রাষ্ট্রের কল্যাণ সাধনে নিয়োজিত হয়। তোমাদের মনে রাখতে হবে, মানুষের জন্য, স্বদেশ-স্বজাতির জন্য নিজেকে উৎসর্গ করার তুলনাহীন যে আদর্শ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রেখে গেছেন তাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার দায়িত্ব তোমাদের। দেশপ্রেমের মহামন্ত্রে উজ্জীবিত হয়ে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তুলবে তোমরা এটাই হোক আজকের অঙ্গীকার।

এর আগে রাষ্ট্রপতি গ্র্যাজুয়েট এবং পোস্ট-গ্র্যাজুয়েট শিক্ষার্থীসহ বর্ণাঢ্য এক শোভাযাত্রায় অংশ নেন এবং নবনির্মিত বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেসা মুজিব ও জাতীর পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল উদ্বোধন করেন।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে শিক্ষা মন্ত্রী ডা. দীপুমনি বলেন, জাতিসত্তা বিকাশে ও উন্নয়নের মাপকাঠি হিসেবে গুণগত শিক্ষার কোনো বিকল্প নেই। শিক্ষ ক্ষেত্রে মানোন্নয়ের বিষয়কে সব্বোর্চ্চ অগ্রাধিকার দিচ্ছে সরকার। বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও কর্মমূখী শিক্ষা বিকাশে বিভিন্ন প্রকল্প ও বঙ্গবন্ধু ফেলোশিপ দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়াও হাতে নেওয়া হয়েছে নানাবিধ প্রকল্প। বিশ্বের নানামূখী চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে আজ মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হয়েছে।

সমাবর্তনে শিক্ষার্থীদের ১০টি স্বর্ণপদক করা হয়। এর মধ্যে স্নাতক পর্যায়ের ৬ জনকে চ্যান্সেলর গোল্ড মেডেল ও স্নাতকোত্তর ৪ জনকে ভাইস-চ্যান্সেলর গোল্ড মেডেল প্রদান করা হয়। সমাবর্তনে ২২৬৩ জন গ্র্যাজুয়েটকে স্নাতক ডিগ্রি ও ৪৪৫ জনকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি এবং ২১৮ জনকে পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ডিপ্লোমা ডিগ্রি প্রদান করা হয়।

এর আগে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ হেলিকপ্টার যোগে ঢাকা থেকে দুপুর পৌনে তিনটায় নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্বববিদ্যালয় মাঠে অবতরণ করেন। সেখান থেকে মোটর শোভাযাত্রা করে অনুষ্ঠান স্থলে পোঁছান এবং বেলা সাড়ে চার টায় আবার হেলিকপ্টার যোগে ঢাকায় ফিরে যান।