নোয়াখালীর বার্তা ডটকম: লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলার কচুয়া আহমদিয়া ফাযিল (ডিগ্রী) মাদ্রাসার গভর্নিং বডির নির্বাচনকে ঘিরে ব্যাপক অনিয়ম ও কারসাজির অভিযোগ উঠেছে।
সবচেয়ে বেশি অভিযোগ উঠেছে মাদ্রাসার দাতা সদস্য নির্বাচন নিয়ে। যেখানে ইসলামী আরবী বিশ্ববিদ্যালয়ের নীতিমালা অনুসারে দুই লক্ষ টাকা দিয়ে দাতা সদস্য হতে হয়, সেখানে চারটি সিলিংফ্যানের বিনিময়ে একজনকে দাতা সদস্য হিসেবে বৈধ ঘোষণা করেছে গভর্নিং বডি নির্বাচন কমিশন। এ নিয়ে এলাকায় সমালোচনার ঝড় উঠেছে।
বুধবার (১২ মার্চ) সরজমিনে পরিদর্শকালে স্থানীয়রা জানান, চারটি ফ্যান দিয়ে দাতা সদস্য হওয়া গোলাম সরওয়ার নিজেও ঐ চারটি ফ্যান দেননি। আরেকজনের দেওয়া সিলিং ফ্যান নিজের হিসেবে দেখিয়ে তিনি দাতা সদস্য হয়েছেন। শুধু তাই নয়, গোলাম সরওয়ারকে দাতা হিসেবে প্রস্তাব ও সমর্থকারী দুজন সদস্যকেই ভোটার হিসেবে অবৈধ ঘোষণা গঠিত করেছে নির্বাচন কমিশন। যে কারণে নীতিমালা অনুসারে এই প্রার্থীরও আর বৈধতা থাকবার কথা নয়।
নির্বাচন কমিশনারের দায়িত্বে থাকা কচুয়া আহমদিয়া ফাযিল ডিগ্রী মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মাওলানা শাহ আলম এবং প্রিজাইডিং অফিসারের দায়িত্ব থাকা রামগঞ্জ উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার ও ভারপ্রাপ্ত মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার শরীফুল্লাহ আশ শামস্ যৌথভাবে এ অনিয়ম সৃষ্টি করেছেন বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।
মহিন উদ্দিন ও মোঃ মাসুদ আলম নামের দাতা সদস্য প্রার্থীগন জানান, সকল শর্ত পূরনের পরও নির্বাচন কমিশনার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মাওলানা শাহ আলম এবং প্রিজাইডিং অফিসার শরীফুল্লাহ আশ শামস তাদের মনোনয়ন ফরম দুটি গোপনীয়তার সাথে বাতিল করছেন। বিষয়টি তাদেরকে জানানো পর্যন্ত হয়নি। বিষয়টি জানতে পেরে প্রতিষ্ঠানে গিয়ে এর কোন সঠিক উত্তর পাননি তারা। এ নিয়ে তারা ৯ মার্চ (রোববার) উপজেলা নির্বাহী অফিস ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
মোঃ মাসুদ আলম বলেন, 'বৈধ দাতা সদস্যদের ভোটার না করে সম্পূর্ণ অনৈতিক ভাবে গোলাম সরোয়ার নামের জনৈক ব্যাক্তির নাম দাতা ক্যাটাগরির চূড়ান্ত ভোটার তালিকায় অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে। শর্ত পূরন না করলেও কারসাজি করে গোলাম সরোয়ারকে বেআইনী ভোটার করে তাকে দাতা সদস্য বানানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।'
প্রিজাইডিং অফিসার উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার ও ভারপ্রাপ্ত মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শরীফুল্লাহ আশ শামস বলেন, 'দুইজন দাতা সদস্য প্রার্থী লিখিত অভিযোগ করেছেন। বিষয়টি প্রতিষ্ঠানের সভাপতি অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) ও রিটার্নিং অফিসার সম্রাট খীসার সাথে আলোচনা করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।'
এদিকে ঘোষিত তপসিল অনুযায়ী আগামী ২৪মার্চ অনুষ্ঠিত হবে কচুয়া আহমদিয়া ফাযিল মাদ্রাসার গভর্নিং বডির নির্বাচন। সে লক্ষে সম্পন্ন করা হয়েছে সকল প্রস্তুতিও। অথচ তপসিলে নির্ধারিত তারিখে ১২ দিন অতিবাহিত হলেও প্রার্থীগনকে দেওয়া হয়নি তাদের প্রতিক। নোটিশ বোর্ডে ঝুলানো হয়নি মনোনয়নপত্র যাচাই বাচাইয়ের ফলাফল।
মাদ্রাসাটির ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মাওঃ শাহ আলম বলেন, '২ মার্চ সন্ধ্যার পর নোটিশ বোর্ডে নির্বাচনের কাগজপত্র ঝুলানো হয়েছে। তবে সকালে এসে তারা আর সেগুলো দেখতে পাননি।'