নোয়াখালীর বার্তা ডটকমঃ নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার জনতা ব্যাংক বসুরহাট শাখা থেকে গ্রাহকদের দুই কোটির বেশি টাকা আত্মাসাতের ঘটনায় ব্যাংকের সাবেক ক্যাশিয়ার লিটন চন্দ্র দাসকে (৪০) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

মঙ্গলবার দুপুরে তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

এদিকে টাকা আত্মসাতের খবর ফাঁস হওয়ার পর শত শত গ্রাহক নিজেদের হিসাবের খোঁজ খবর নিতে ব্যাংকে ভিড় করছেন।

জানা গেছে, সোমবার দিবাগত রাতে কৌশলে কর্মকর্তাদের মাধ্যমে জনতা ব্যাংক বসুরহাট শাখায় ডেকে এনে লিটন চন্দ্র দাসকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করা হয়। গ্রেপ্তার লিটন চন্দ্র দাস সেনবাগ উপজেলার দক্ষিণ মোহাম্মদপুর গ্রামের নারায়ণ ভন্ডের বাড়ির রবিন্দ্র কুমার দাসের ছেলে। তিনি বর্তমানে নোয়াখালী পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের হরিনারায়নপুর বসবাস করেন।

ব্যাংকের কর্মকর্তা ও গ্রাহক সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার বিভিন্ন এমপিওভুক্ত স্কুল ও কলেজের দেড় শতাধিক শিক্ষকের বেতনের বিপরীতে নেয়া ঋণের পরিশোধিত টাকা ব্যাংকে জমা না দিয়ে কৌশলে আত্মসাৎ করেন লিটন। একই সময় বিভিন্ন গ্রাহকের হিসাবে আমানতের টাকা জমা না দিয়ে দুই কোটির অধিক টাকা আত্মসাতের প্রমাণ পাওয়া গেছে লিটনের বিরুদ্ধে। ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ তদন্ত করে মামলা করার পর লিটন চন্দ্র দাসকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ২০১২ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি থেকে ২০২০ সালের ৩ ফেব্রুয়ারির মধ্যে এ আত্মসাতের ঘটনা ঘটে। গ্রেপ্তারের আগ পর্যন্ত লিটন লক্ষ্মীপুর জেলার জনতা ব্যাংকের চর আলেকজান্ডার শাখায় ক্যাশিয়ার পদে কর্মরত ছিলেন।

একটি সূত্রে জানা গেছে, লিটন চন্দ্র দাস ও তার সঙ্গে জড়িতরা কয়েকজন ব্যাংক থেকে আত্মসাৎকৃত টাকা দিয়ে জেলা শহর মাইজদীতে নিজেদের মালিকানায় বহুতল ভবন নির্মাণ করেছে।

এ বিষয়ে জনতা ব্যাংক বসুরহাট শাখার ম্যানেজার মো. সামছুল ইসলাম জানান, এ পর্যন্ত অভিযুক্ত ক্যাশিয়ার লিটন চন্দ্র দাসের কাছ থেকে প্রায় এক কোটি টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। অবশিষ্ট টাকাও উদ্ধার করার চেষ্টা চলছে। তবে এ বিষয়ে গ্রাহকদের আতংকিত হওয়ার কোনো কারণ নেই। আমানতকারী ও গ্রাহকরা তাদের সম্পূর্ণ টাকা ফেরত পাবেন বলে তিনি আশ্বস্ত করেছেন।

কোম্পানীগঞ্জ থানার পুলিশ-পরিদর্শক (তদন্ত) রবিউল হক জানান, জনতা ব্যাংক বসুরহাট শাখার ম্যানেজার সামছুল ইসলামের করা মামলায় সাবেক ক্যাশিয়ার লিটন দাসকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
আত্মসাৎকৃত টাকা উদ্ধার ও ঘটনার সঙ্গে আর কারা জড়িত রয়েছে তা উদঘাটন করার জন্য লিটনের রিমান্ড আবেদন করা হয়েছে।