যশোর-২ আসনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী সাবিরা সুলতানার দণ্ড স্থগিত করে দেয়া হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে চেম্বারজজ আদালতের স্থগিতাদেশ বহাল রেখেছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। আপিল বিভাগের এই সিদ্ধান্তের ফলে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সাবিরার অংশ নেয়ার সুযোগ থাকল না। ফলে দুই বছরের বেশি দণ্ডিতদেরও নির্বাচন করার আর সুযোগ থাকল না।

এ বিষয়ে উভয়পক্ষে শুনানি করে রোববার প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন নেতৃত্বে সাত সদস্যের আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ চেম্বার কোর্টের দেয়া স্থগিতাদেশ চলমান রাখেন। আদালত আদেশে বলেন, ‘স্টে টু কন্টিনিউ’।

এর আগে গত বৃহস্পতিবার (২৯ নভেম্বর) যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলা চেয়ারম্যান সাবিরা সুলতানাকে নিম্ন আদালতের দেয়া ছয় বছরের সাজা ও দণ্ড স্থগিত করেছিলেন হাইকোর্টের একক বেঞ্চ। পরে রাষ্ট্রপক্ষ ও দুদকের আবেদনের প্রেক্ষিতে চেম্বার কোর্ট গতকাল (৩০ নভেম্বর) শনিবার তা স্থগিত করে আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে রোববার শুনানির জন্য দিন ধার্য করে আদেশ দেন। সে অনুযায়ী আজ শুনানি অনুষ্ঠিত হয়।

দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান বলেন, সাবিরা সুলতানার দণ্ড স্থগিতে হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত করে চেম্বার কোর্টের দেয়া আদেশ আপিল বিভাগও বহাল রেখেছেন। সর্বোচ্চ আদালতের এই সিদ্ধান্তের ফলে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সাবিরার অংশ নেয়ার আর সুযোগ থাকল না। ফলে দুই বছরের বেশি দণ্ডিতদের নির্বাচন করার সুযোগ থাকল না।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনালে মাহবুবে আলম। সঙ্গে ছিলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মুরাদ রেজা ও অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মো. মোমতাজ উদ্দিন ফকির। দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী খুরশীদ আলম খান ও অ্যাডভোকেট এবিএম বায়েজিদ। সাবিরার পক্ষে ছিলেন সিনিয়র আইনজীবী এজে মোহাম্মদ আলী ও এম আমিনুল ইসলাম।

অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেন, আজকের আদেশের ফলে সাবিরা সুলতানার নির্বাচনে অংশ নেয়ার সুযোগ আর থাকল না। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মাহবুবে আলম বলেন, শুধু সাবিরা সুলতানাই নয়, এটা সংবিধানের বিধান। দুই বছরের বেশি দণ্ডিত কেউ নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না।

জ্ঞাত আয়-বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও সম্পদের তথ্য গোপনের মামলায় চলতি বছর ১২ জুলাই সাবিরা সুলতানাকে দুটি ধারায় তিন বছর করে মোট ছয় বছরের সাজা দেন ঢাকার একটি বিশেষ জজ আদালত। যশোর-২ আসনে বিএনপির মনোনয়ন পাওয়া সাবিরা ওই সাজা ও দণ্ড স্থগিতের আবেদন করলে বিচারপতি মো. রইস উদ্দিনের একক হাইকোর্ট বেঞ্চ গত বৃহস্পতিবার (২৯ নভেম্বর) তা মঞ্জুর করেন।

এর আগে হাইকোর্টের একটি দ্বৈত বেঞ্চ বলেছিলেন, দুই বছরের বেশি দণ্ড ও সাজা হলে আপিল করেও কেউ নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না। এ আদেশ আপিল বিভাগও বহাল রাখেন। দুর্নীতি মামলায় বিএনপির পাঁচ নেতার দণ্ড ও সাজা স্থগিতের আবেদন খারিজ করে বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কে এম হাফিজুল আলমের সমন্বয়ে গঠিত একটি হাইকোর্ট বেঞ্চ এ পর্যবেক্ষণ দেন। ফলে আবেদনকারী পাঁচ বিএনপি নেতা আমানউল্লাহ আমান, এ জেড এম জাহিদ হোসেন, ওয়াদুদ ভূঁইয়া, মো. মসিউর রহমান ও মো. আবদুল ওহাবের নির্বাচনে অংশ নেয়ার পথ বন্ধ হয়ে গেছে বলে মত দিয়েছিলেন দুদকের আইনজীবী।