বার্তা ডেস্কঃ ফেনীর সোনাগাজী উপজেলার চর মজলিশপুর ইউনিয়নের চান্দলা গ্রামে প্রথম শ্রেণির ছাত্র মোশারফ হোসেন রিফাতকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে নির্যাতন করে হত্যার অভিযোগে ২ জনকে গ্রেফতার করেছে সোনাগাজী মডেল থানা পুলিশ। সোমবার রাতে তাদের আটকের পর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করা হলে গ্রেফতার দেখানো হয়।

মঙ্গলবার দুপুরে ফেনী সদর হাসপাতালে ময়নাতদন্ত শেষে পারিবারিক কবরস্থানে রিফাতের লাশ দাফন করা হয়েছে।

সোনাগাজী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোয়াজ্জেম হোসেন এসব তথ্য জানান।

তিনি বলেন, এলাকাবাসীর সহযোগিতায় অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা হয়েছে। আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এদিকে মঙ্গলবার চান্দলা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সহপাঠি রিফাত হত্যার বিচার দাবিতে মানববন্ধন করেছে।

পুলিশ ও পারিবারিক সুত্রে জানা যায়, চান্দলা গ্রামের রিকশাচালক মো. রিপনের ছেলে মোশারফ হোসেন রিফাত প্রতিদিনের মতো সোমবার বিকাল বেলায় নিজ ঘরের সামনে খেলছিল।

এ সময় একই বাড়ির মোমিনুল হকের ছেলে ওমর আলী বাবু (১৮) রিফাতকে ফুসলিয়ে খেলতে যাওয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যায়। পরে নির্যাতন চালিয়ে হত্যা করে বাড়ি থেকে বেশ দূরে ধান ক্ষেতের একটি গর্তে তার লাশ ফেলে মাটি চাপা দেয়।
এদিকে সন্ধ্যা ঘনিয়ে এলেও রিফাত বাড়ি না ফেরায় চারদিকে তাকে খুঁজতে থাকে পরিবারের লোকজন। এক পর্যায়ে এলাকায় মাইকিংও করা হয়। এলাকাবাসী রাত প্রায় ৯ টা পর্যন্ত রিফাতকে খুঁজে না পেয়ে ওমর আলী বাবুকে সন্দেহ করে জিজ্ঞাসা করলে সে অস্বীকার করে।

কিন্তু স্থানীয়রা তাকে মারধর করলে সে রিফাতকে হত্যার কথা স্বীকার করে। পরে এলাকাবাসীকে সঙ্গে নিয়ে ঘটনাস্থলে গেলে পুতে রাখা গর্ত থেকে রিফাতের লাশ উদ্ধার করা হয়।

এলাকাবাসী বাবু ও তার পিতা মোমিনুল হককে আটক করে থানায় খবর দিলে সোনাগাজী মডেল থানার ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনের নেতৃত্বে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে অভিযুক্ত দুজনকে গ্রেফতার করে। এসময় নিহত শিশু রিফাতের লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।

এঘটনায় নিহতের চাচা শিপন বাদী হয়ে সোনাগাজী মডেল থানায় মামলা দায়ের করছে।

চান্দলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নিজাম উদ্দিন টিপু জানান, রিফাত সোমবার সকালে বিদ্যালয়ে এসে পরীক্ষা দিয়ে গেছে। সে ছাত্র হিসাবে ভালো ছিল। তার রোল নাম্বার ছিল ৫। সে নিয়মিত বিদ্যালয়ে আসত। আমরা তার হত্যাকারীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।

রিফাতের মামা খোরশেদ আলম জানান, রিফাতের বাবা পেশায় একজন রিকশা চালক। তিনি একদম সহজ সরল মানুষ। দুই ছেলের মাঝে বড় ছেলেকে হারিয়ে পাগলের মত প্রলাপ বকছেন। মা জাহেদা বেগম ছেলেকে হারিয়ে বারবার জ্ঞান হারাচ্ছেন। জ্ঞান ফিরলেই এদিক ওদিক তাকিয়ে ছেলেকে এনে দেয়ার আকুতি জানাচ্ছেন।