নোয়াখালীর বার্তা ডটকমঃ নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার চেয়ারম্যানঘাটে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এতে একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালিকসহ তিনজন অগ্নিদগ্ধ হয়ে মারা গেছেন। এছাড়া আগুনে পুড়ে গেছে অন্তত ২০টি দোকান। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কোটি টাকার বেশি বলে অনুমান করছেন ক্ষতিগ্রস্থরা।
সোমবার দিবাগত রাত নয়টার দিকে এ অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে। আগুন নিয়ন্ত্রণে প্রায় রাত সাড়ে ১২টা পর্যন্ত কাজ করে ফায়ার সার্ভিসের ২টি ইউনিট।
মৃত ব্যক্তিরা হলেন, দোকানের মালিক মহিবুল ইসলাম নিপু, রহমত উল্যাহ ও আব্দুল খালেদ। নিহত মহিবুল ইসলাম নিপু চৌমুহনী পৌরসভার গণিপুর এলাকার বাসিন্দা।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রতিদিনের মতো সোমবার রাতে নিজ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীদের নিয়ে হিসেব করছিলেন নিপু। রাত ৯টার দিকে হঠাৎ করে নিপুর তেল দোকান থেকে আগুনের লেলিহান শিখা দেখতে পায় স্থানীয় লোকজন। পরে স্থানীয়রা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে এবং সুবর্ণচর ফায়ার স্টেশনে খবর দেয়। খবর পেয়ে সুবর্ণচর ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট ও পরে মাইজদী স্টেশনের আরও একটি ইউনিট স্থানীয়দের সহযোগিতায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। কিন্তু ততক্ষণে তেল, মুদি, কনফেকশনারি, খাওয়ার হোটেল, মোবাইল দোকানসহ অন্তত ২০টি দোকান সম্পূর্ণ পুড়ে ছাই হয়ে যায়।
আগুন নিয়ন্ত্রণের পর দোকানগুলোর ভেতরে তল্লাশি চালিয়ে পুড়ে যাওয়া নিপুর তেল দোকান থেকে নিপু ও রহমত নামে দুইজনের অগ্নিদগ্ধ মরদেহ উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা। এছ্ড়াা আগুনের সূত্রপাতের কিছুক্ষণ পর অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় নিপুর দোকান থেকে বের হয়ে আসা খালেদকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নিলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মঙ্গলবার ভোরে তিনিও মারা যান। এছাড়া আরো দুইজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।
মৃত্যু থেকে বেঁচে যাওয়া শহিদ জানান, রাতে তিনিসহ মোট পাঁচজন ছিলেন নিপুর তেলের দোকানে। দোকানের মালিক নিপুসহ তিনজন েিপছনে হিসাব করছিলেন। সামনে ছিলেন দুইজন। হঠাৎ দোকানের সামনে থেকে বিকট শব্দ করে আগুন লেগে গিয়ে দ্রুত আগুন দোকানের পেছনের চলে যায়। এ সময় তিনি আগুনসহ লাফ দিয়ে বাহিরে বের হয়ে অচেতন হয়ে যান। পরে জানতে পারেন দোকানের মালিক নিপু, কর্মচারি রহমত এবং আরেকজন স্থানীয় লোক খালেদ পুড়ে মারা গেছেন।
চেয়ারম্যান ঘাট পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ আবদুল হালিম বলেন, অগ্নিদগ্ধ দুইজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।্ আর একজন ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে নিপুর তেল ও গ্যাস সিলিন্ডারের দোকান থেকেই আগুনের সূত্রপাত। তারপরও অগ্নিকাণ্ডের মূল কারণ, হতাহত ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানতে ফায়ার সার্ভিস একটি তদন্ত কমিটি করেছে।
সুবর্ণচর ফায়ার সার্ভিসের সাব অফিসার মো. নূর নবী বলেন, খবর পেয়ে সুবর্ণচর ও মাইজদী স্টেশনের ২টি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে প্রায় ৩ঘন্টা চেষ্টার পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়। আগুনের সূত্রপাত ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ তদন্ত পরবর্তী বলা যাবে।