নোয়াখালীর বার্তা ডটকমঃ নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার আলাইয়াপুর ইউনিয়নে থেকে অপহৃত মাদ্রাসাছাত্রীকে (১৭) দুই মাস পর ঢাকার সাভার থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। এর আগে ওই ছাত্রীর মা বাদী হয়ে গত বৃহস্পতিবার রাতে চারজনকে আসামি করে দুটি মামলা করেন। মামলায় আসামি সাইফুল ইসলাম ইমনকে পাঁচ দিনের রিমান্ড ও ফয়সালের ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি নিয়েছে আদালত।
শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে অপহৃত ছাত্রীকে সাভারের পূরগাও এলাকা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন নোয়াখালী অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অপরাধ) দীপক জ্যোতি খীসা।
পুলিশ জানায়, বৃহস্পতিবার রাতে অপহৃত ওই ছাত্রীর মা বাদী হয়ে চারজনকে আসামি করে পৃথক দুটি মামলা করেন। মামলার পর সাঁড়াশি অভিযানে নামে পুলিশ। অভিযানকালে বেগমগঞ্জ থানার এসআই মোস্তাক আহমেদ, ফিরোজ আলম, রুবেল মিয়া ও এএসআই নূর নবীর নেতৃত্বে শনিবার সন্ধ্যায় সাভারের পূরগাও এলাকার জৈনিক রুবির বাসায় অভিযান চালায় পুলিশ। এসময় ওই বাসার একটি কক্ষ থেকে অপহৃত ছাত্রীকে উদ্ধার করা হয়। তবে এসময় ওই বাসায় অন্য কাউকে পাওয়া যায়নি।
অপরদিকে, এ মামলায় গ্রেপ্তার আসামি সাইফুল ইসলাম ইমন ও ফয়সালকে শনিবার বিকালে নোয়াখালী সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হলে বিচারক মোসলেহ উদ্দিন মিজান ১৬৪ ধারায় আসামি ফয়সালের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি রেকর্ড করেন। অপর আসামি ইমনকে ধর্ষণ ও অপহরণ মামলায় তিন দিন ও পর্ণোগ্রাফি মামলায় দুই দিনসহ মোট পাঁচ দিনের রিমান্ড প্রদান করেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও বেগমগঞ্জ থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) রুহুল আমিন জানান, পৃথক দুটি মামলায় সাইফুল ইসলাম ইমনকে পাঁচ দিন করে ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করে আদালতে হাজির করলে আদালত দুটি মামলায় তার পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
প্রসঙ্গত, গত ২০১৮ সালের ১৩ মার্চ রাতে মামলার আসামি ফয়সাল ও জোবায়ের ঘরে ডুকে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে ওই ছাত্রীকে পালাক্রমে ধর্ষণ করে তার ভিডিও ধারণ করে। ঘরে থেকে যাওয়ার সময় তারা আমার আলমেরি থেকে নগদ ৫০ হাজার টাকা, স্বর্ণের চেইন ও দুইটি আংটি নিয়ে যায়। গত ২০২০ সালের ৫মার্চ রাত আড়াইটার দিকে ইমন ও রাসেল ঘরে ডুকে নির্যাতিতাকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। ঘটনার তিন মাস পর রাসেলকে ৫০ হাজার টাকা দিয়ে ঢাকার মিরপুর-২, ৭নং রোডের ৩নং গলির জান্নাত নামে এক নারীর কাছ থেকে মেয়েকে নিয়ে আসেন তার মা। ওই তিন মাসে অপহৃতাকে একাধিকবার ধর্ষণ করে রাসেল। এরপর বিভিন্ন সময় ইমন বাড়িতে এসে আগ্নেয়াস্ত্রের ভয় দেখিয়ে ওই ছাত্রীকে একাধিকবার ধর্ষণ করে। সবশেষ গত বছরের ২৪ ডিসেম্বর সন্ধ্যা ৭টার দিকে তাকে আবারও অপহরণ করে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় গত বৃহস্পতিবার রাতে নির্যাতিতার মা বাদী হয়ে চারজনকে আসামি করে বেগমগঞ্জ থানায় পৃথক দুটি মামলা করেন। মামলার পর পুলিশ অভিযান চালিয়ে আসামি ফয়সাল ও ইমনকে গ্রেপ্তার করে।