সাইফুল ইসলাম রিয়াদ: নোয়াখালীর এক সময়ের খরস্রোতা বীরেন্দ্র খাল দখল-দূষণে হারিয়ে যাচ্ছে। প্রায় ৩০০ বছরের পুরনো এ খাল দিয়ে মেঘনা-ডাকাতিয়া নদী হয়ে ছোট বড় ট্রলারে ও নৌকায় পণ্যসামগ্রী নোয়াখালীর বিভিন্ন হাট-বাজারে আনা নেয়া করতেন ব্যবসায়ীরা। এ খালের পানি এখানকার কৃষিজমির সেচের কাজে ব্যবহৃত হতো। কিন্তু অব্যাহত দখল-দূষণে অস্তিত্বহীন হয়ে পড়েছে ঐতিহ্যবাহী বীরেন্দ্র খালটি। অবৈধ দখলদারদের দখলে ও ময়লা-আবর্জনায় হারিয়ে যাচ্ছে খালটি। এক সময়ের খরস্রোতা খালটি এখন নালায় পরিণত হয়েছে। কিন্তু দেখার কেউ নেই।
জানা যায়, বীরেন্দ্র খালটি ৩০০ বছরের পুরনো মোঘল আমলের। ভারতের ত্রিপুরার পাহাড়ি ঢল থেকে নোয়াখালী ও কুমিল্লার আংশিক অঞ্চলকে রক্ষায় পানি নিষ্কাশন ও সেচ কাজের সুবিধার জন্য খালটি খনন করা হয়। ১৯০৫-১৯১০ সালের মধ্যে স্থানীয় জমিদার প্রথম খালটি সংস্কার করেন। সংস্কার করে জমিদার এ খালের নামকরণ করেন বীরেন্দ্র খাল। সর্বশেষ ১৯৮০-৮১ সালে বীরেন্দ্র খালের আংশিক অংশের সংস্কার করা হয়।
জানা যায়, বর্তমানে এক শ্রেণির প্রভাবশালী মহল জেলা পরিষদের অস্থায়ী একসনা লিজের অপব্যবহার করে খালের মাঝখানে পাকা পিলার দিয়ে দোকানঘর নির্মাণ করে পুরো খাল দখল করে নিচ্ছে। চাটখিল পৌরসভা অংশে খালের অস্তিত্ব নেই বললেই চলে। চাটখিল বাজার ও আবাসিক এলাকার পঁচা আবর্জনা ফেলে খালের অস্তিত্ব বিলীন করে দিচ্ছে। বাজারে প্রবেশ পথের ব্রিজ এর নিচের অংশে আবর্জনা ফেলায় ভরাট হয়ে গেছে। এ ছাড়া পৌর এলাকা, দশঘরিয়া বাজার এলাকা, সাহাপুর বাজার এলাকাসহ বিভিন্ন স্থানে খাল ভরাট হয়ে যাচ্ছে। এ ছাড়া চাটখিল-সোনাইমুড়ী উপজেলার বাংলাবাজার, জয়াগ বাজারসহ বিভিন্ন স্থানে বীরেন্দ্র খাল প্রভাবশালীরা দখলে নিয়ে ভরাট করছে। বর্তমানে খালটি চিহ্নিত করার কোনো উপায় নেই।
এলাকাবাসীর দাবি ঐতিহ্যবাহী বীরেন্দ্র খালটি জরুরিভিত্তিতে সংস্কার করে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করা হোক। এ ছাড়া কৃষি নির্ভর চাটখিল এলাকার কৃষকরা যাতে এ খালের পানি সেচ দিয়ে ফসল উৎপাদন করতে পারে সে ব্যবস্থা নেয়া দরকার।
বীরেন্দ্র খালটি দখল মুক্ত করার বিষয়ে চাটখিল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু সালেহ মোহাম্মদ মোসা সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের ব্যাপারে জেলা পরিষদ এবং সড়ক ও জনপদ বিভাগের সঙ্গে যোগাযোগ করে আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।