নোয়াখালীর বার্তা ডটকমঃ নোয়াখালী জেলায় ৬৬টি ভ্রাম্যমাণ আদালতে ২৫২টি মামলায় ১৭ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড ও ১৬ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। মে মাসব্যাপী এসব দণ্ড দেওয়া হয়।
জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রোকনুজ্জামান খান জানান, আইন শৃঙ্খলা রক্ষা এবং অপরাধ প্রতিরোধ কার্যক্রমকে কার্যকর ও অধিকতর গতিশীল করার লক্ষ্যে মোবাইল কোর্ট আইন ২০০৯ এর তফসিলভুক্ত ফৌজদারি অপরাধ তাৎক্ষণিকভাবে আমলে নিয়ে মে মাসব্যাপী নোয়াখালী জেলার এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেটরা ৬৬টি ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন। জেলা, উপজেলা, শহর ও স্থানীয় পর্যায়ে পরিচালিত এসব ভ্রাম্যমাণ আদালতে ২৫২টি মামলায় ২৫২ জনকে দণ্ডিত করে ১৬ লাখ ১০ হাজার টাকা জরিমানা ও ১৭ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
রোকনুজ্জামান খান আরো বলেন, মোবাইল কোর্ট আইন ২০০৯ এর আওতায় মে মাসব্যাপী ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন ২০০৯, মোটরযান অধ্যাদেশ ১৯৮৩, বাংলাদেশ গ্যাস আইন ২০১০, বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন ২০১২, দণ্ডবিধি ১৮৬০, মৎস সংরক্ষণ আইন ১৯৫০, পেট্রোলিয়াম আইন ২০১০, ড্রাগ অ্যাক্ট ১৯৪০, মেডিক্যাল প্র্যাকটিস এবং বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিক (নিয়ন্ত্রণ) আইন ১৯৮২ ইত্যাদি আইনে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয়।
জেলা প্রশাসনের এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেটরা মে মাসে ১৬ টি ভ্রাম্যমাণ আদালতে ১৪৭টি মামলা পরিচালনা করে ১৪৭জনকে দণ্ডিত করেন। ১০ লাখ ৮৬ হাজার চারশ টাকা জরিমানা আরোপ ও আদায় করা হয়। একজনকে বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন ১৯৮২ এর ৩৪ (খ) ধারায় ৭দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়। উপজেলা পর্যায়ে এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেটরা (উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও সহকারী কমিশনার (ভূমি)) একই সময়ে ৫০ টি ভ্রাম্যমাণ আদালতে ১০৫টি মামলা পরিচালনা করে ১০৫জনকে দণ্ডিত করে ৫ লাখ ২৩ হাজার ৬শ টাকা জরিমানা দণ্ড আরোপ ও আদায় করেন। ১৬জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেন।’
মুসলমান ধর্মীয় সম্প্রদায়ের পবিত্র রমজান মাস ও আসন্ন ঈদুল ফিতর উপলক্ষে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম নিয়ন্ত্রণ ও আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার লক্ষ্যে জেলার বিভিন্ন স্থানে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয়। জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট তন্ময় দাসের নির্দেশনা অনুযায়ী খাদ্যে ভেজাল মেশানো, রেজিস্ট্রেশন ও লাইসেন্সবিহীন গাড়ি চালনা, বাস ভাড়া বৃদ্ধি, স্বাস্থ্যসেবায় নিম্নমান, অনুমোদনবিহীন ল্যাব ও ফার্মেসি পরিচালনা, গ্যাস সিলিন্ডারের যত্রতত্র ও অনুমোদনবিহীন ব্যবসায়, অতিরিক্ত ও চোরাই গ্যাসের লাইন ব্যবহার, ইভটিজিং, অনুমোদনবিহীনভাবে বন্যপ্রাণীর মাংস ও তেল বিক্রি এবং জীবন্ত বন্যপ্রাণী আটক, সরকারি কাজে বাধা, অবৈধ দখল উচ্ছেদ ও খাল পুনরুদ্ধার, অনুমোদনবিহীন ও খোলা পেট্রোলিয়ামজাত দ্রব্যাদি ক্রয়-বিক্রয়, প্রতিটি সেবার মূল্য তালিকা প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে সংরক্ষণ ও পণ্যের গুণগত মান বিষয়গুলোকে এ মাসের ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনায় প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। গণশুনানিতে জেলা প্রশাসকের কাছে গ্রাহক ও ভোক্তাদের সরাসরি অভিযোগের পর পাসপোর্ট অফিস নোয়াখালী ও এর পাশের বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করা হয়। একইসঙ্গে হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী নিম্নমানের পণ্য বাজার থেকে সরিয়ে নেওয়ার বিষয়টি তদারকি ও বিধি অনুযায়ী ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয়েছে।’
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক দেবানন্দ সিনহা জানান, ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার সময় সুপার শপ, চেইন শপ ও বড় বড় প্রতিষ্ঠানগুলোর অস্বাভাবিক মুনাফা করার বিষয়টি উৎঘাটিত হয়। একইসঙ্গে এসব ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানে আমদানিকারকের নাম ও সিলবিহীন ভেজাল ও নিম্নমানের পণ্য পাওয়া যায়। অতিরিক্ত মুনাফার বিষয়ে ব্যবসায়ীদের সতর্ক করে ভেজাল পণ্যের জন্য দণ্ড আরোপ করা হয়।