নোয়াখালীর বার্তা ডটকমঃ বেগমগঞ্জ উপজেলার আলাইয়াপুর ইউনিয়নে আক্রান্ত হওয়া ব্যক্তি যে অটোরিকশার যাত্রী ছিল ওই অটোচালকের ১৩বছর বয়সী ছেলে করোনায় আক্রান্ত হয়েছে।
নোয়াখালী বেগমগঞ্জ উপজেলায় ১৩বছরের এক কিশোর, (৩১) একজন, (৫৫) একজন হাতিয়ায় এক স্বাস্থ্যকর্মী (৫০) ও চাটখিলে (৪৯) এক ব্যক্তি করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এনিয়ে জেলায় করোনা রোগীর সংখ্যা বেড়ে ২২জন। যারমধ্যে জেলার বেগমগঞ্জ উপজেলায় ১১জন, সদরে ২জন, সোনাইমুড়ীতে ৩জন, হাতিয়ায় ২জন, সেনবাগে ১জন, কবিরহাটে ২জন ও চাটখিলে ১জন। যার মধ্যে মারা গেছেন সোনাইমুড়ীতে এক ইতালি প্রবাসী ও সেনবাগে এক রাজমেস্ত্রী। সুস্থ হয়ে উঠেছেন সোনাইমুড়ীতে মৃত ইতালী প্রবাসীর স্ত্রী।
বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে জেলা নতুন করে আরও ৫জন আক্রান্তের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেলা সিভিল সার্জন ডা. মো মোমিনুর রহমান। তিনি বলেন গত ২৯এপ্রিল পাঠানো নমুনা রিপোর্টে হাতিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের এক সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক, বেগমগঞ্জে এক কিশোরসহ তিনজন ও চাটখিলে একজনের করোনা পজিটিভ এসেছে।
বেগমগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. অসীম কুমার দাস বলেন, গত ২৮এপ্রিল মঙ্গলবার রাতে করোনা শনাক্ত হওয়া আলাইয়াপুরের হাজী বেলাল হোসেন প্রকাশ বেলাল ড্রাইভার (৬৫) আক্রান্ত এ কিশোরের বাবার অটোরিকশা উঠেছিল। যেহেতু কিশোরের পিতা বেলাল ড্রাইভারের সংস্পর্শে এসেছিল তাই গত ২৯এপ্রিল তার বাবা-মা’সহ তিনজনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়। ওইদিন মোট ৬জনের নমুনা পরীক্ষার জন্য বিআইটিআইডিতে পাঠানো হয়। যার মধ্যে কিশোরের করোনা পজিটিভ আসলেও তার বাবা-মা সহ বাকী পাঁচজনের নেগেটিভ এসেছে। লকডাউন করা হয়েছে মিয়াপুর গ্রামের তার বাড়ী। ওই কিশোরের কোন উপসর্গ না থাকায় তাকে হোম আইসোলেশনে রাখা হয়েছে। হোম কোয়ারেন্টাইনে রয়েছে ওই বাড়ীর ১০টি পরিবারের লোকজন। বৃহস্পতিবার তার সংস্পর্শে আসা সকলের নমুনা সংগ্রহ করা হবে।
তিনি আরও বলেন, গত ৩মে তিনজনের নমুনা সংগ্রহ করে বিআইটিআইডিতে পাঠানো হয়। এরমধ্যে আলাইয়াপুর ইউনিয়নের মিয়াপুর গ্রামের বাসিন্দা (৩১) এর করোনা পজিটিভ এসেছে। তিনি চৌমুহনী পূর্ব বাজারে মোবাইল ব্যবসা করেন। অপরজন চৌমুহনী পৌরসভার ৬নং ওয়ার্ড গণিপুর এলকার বাসিন্দা (৫৫) তারও করোনা পজিটিভ এসেছে। তিনি চৌমুহনী গোলাবাড়ীয়া একটি মাছের আড়ৎ এ কাজ করেন। অপরজনের রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে। আক্রান্ত দু’জনের শরীরের করোনা উপসর্গ রয়েছে। লকডাউন করা হয়েছে তাদের উভয়ের বাড়ী। তাদের নিজ বাড়ীতে হোম আইসোলেশনে রাখা হয়েছে। হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকবে তাদের পরিবার ও বাড়ীর লোকজন। তাদের সংস্পর্শে আসা সকলের নমুনা সংগ্রহ করা হবে।
চাটখিল উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোস্তাক আহমেদ বলেন, আক্রান্ত ব্যক্তি চাটখিল উপজেলার রামনারায়ণপুর ইউনিয়নের দক্ষিন রামনারায়ণপুর গ্রামের সর্দার বাড়ির বাসিন্দা। তিনি গত ১মে ঢাকা থেকে গ্রামের বাড়ীতে আসেন। এলাকায় এসে তিনি ধান কাটতে গেলে স্থানীয় লোকজন তাতে বাধা প্রদান করে এবং বিষয়টি আমাদের অবগত করে। খবর পেয়ে ৩মে স্বাস্থ্য কর্মী পাঠিয়ে তার নমুনা সংগ্রহ করে বিআইটিআইডি চট্টগ্রামে পাঠানো হয়। বর্তমানে স্বাস্থ্যকর্মীদের তত্ত্ববধানে তাকে হোম আইসোলেশনে রাখা হয়েছে। লকডাউন করা হয়েছে তার বাড়ী। হোম কোয়ারেন্টাইনে আছে তার পরিবারসহ ওই বাড়ীর সকল সদস্য। আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে আসা অন্যদেরও নমুনা সংগ্রহ করা হবে।
হাতিয়া উপজেলা মেডিক্যাল অফিসার রোগ নিয়ন্ত্রণ ডা. নিজাম উদ্দিন বলেন, গত ২৯এপ্রিল হাতিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক ও তার মেয়ে ঢাকা ইডেন কলেজের ছাত্রীসহ তিন জনের নমুনা সংগ্রহ করে বিআইটিআইডিতে পাঠানো হয়। মঙ্গলবার বিকেলে চট্টগ্রাম ভেটেনারি ইউনিভার্সিটি থেকে আসা রিপোর্টে দুইজনের নেগেটিভ আসলেও সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শকের করোনা পজিটিভ এসেছে। তার বাড়ী হাতিয়া উপজেলার সোনাদিয়া ইউনিয়নে। তিনি পরিবারের ৪সদস্য নিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সরকারি কোয়ার্টারে থাকেন। নমুনা সংগ্রহের পর থেকে তার ইডেন পড়–য়া মেয়েসহ সবাই হোম কোয়ারেন্টাইনে আছেন। বর্তমানে তাদের সবাইকে হাসপাতালের কোয়ার্টারে হোম আইসোলেশনে রাখা হয়েছে। আগে আক্রান্ত হওয়া হাসপাতালের কর্মী (আয়া) থেকে তিনি সংক্রমিত হতে পারেন বালে ধারণা করা হচ্ছে।