নোয়াখালীর বার্তা ডটকমঃ নোয়াখালীতে মাদ্রাসা শিক্ষক, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের গুদাম রক্ষক, ব্র্যাক এনজিও কর্মী ও শিশুসহ আরও ১০জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এনিয়ে জেলায় করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাড়িয়েছে ৫৮ জনে।
মঙ্গলবার বিকেলে নোয়াখালী সিভিল সার্জন ডা. মো. মোমিনুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
নোয়াখালী সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, জেলায় নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হয়েছে জেলার সদর উপজেলার পশ্চিম অশ্বদিয়ার এক নারী (৩৯), শ্রীপুরের এক ব্যক্তি (৫৫), উত্তর ফকিরপুর (৫০) একজন। বেগমগঞ্জ উপজেলার চৌমুহনী পৌরসভার তফাদার পোল এলাকার (২৭) একজন, দূর্গাপুর ইউনিয়নের লক্ষ্মীনারায়ণপুর (৪২) ও (২৪), চৌমুহনী পৌরসভা হাজীপুরের (৩৫) একজন। চাটখিল উপজেলার দক্ষিণ দেলিয়াই এলাকার (৪২) ও (৯) এবং সোনাইমুড়ী উপজেলার (৩৫) একজন।
বেগমগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: অসীম কুমার দাস জানান, উপজেলার পৌর হাজীপুরে ৩৫ বছর বয়সী এক যুবক এর করোনা শনাক্ত হয়েছে। তিনি নোয়াখালী জেলা জজ আদালতের এক আইজীবির সহকারী হিসেবে কাজ করেন। এছাড়া উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা ৪২ বছর বয়সী এক গাড়ী চালক, লক্ষ্মীনারায়নপুর এলাকার বাসিন্দা একটি ওষধ দোকানের কর্মচারী এক যুবক ও চৌমুহনী তফদারপোল এলাকার বাসিন্দা বেসরকারি এনজিও ব্র্যাক কর্মীর করোনা শনাক্ত হয়েছে। তারা উপসর্গ নিয়ে গত ৫ মে হাসপাতালে আসলে তাদের নমুনা সংগ্রহ করে চট্টগ্রামের বিআইটিআইডিতে প্রেরণ করা হয়। আক্রান্ত ব্যক্তিদের বাড়ি লকডাউন করা হয়েছে। তাদের শারীরিক উপসর্গ না থাকায় হোম আইসোলেশনে রাখা হয়েছে।
চাটখিল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের করোনা ফোকাল পার্সন ডা: তামজিদ হোসাইন বলেন, উপজেলার দেলিয়াই ইউনিয়নের একটি মাদ্রাসার শিক্ষক ও তার ছেলের করোনা শনাক্ত হয়েছে। তিনি ১০-১২ দিন আগে তার ভাইয়ের করোনা শনাক্ত হওয়ায় বেগমগঞ্জ নিজ বাড়ি থেকে পালিয়ে চাটখিলে এসছিলেন। গত ৫মে তাকে চাটখিল পাঁচগাঁও সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে রেখে তার ও পরিবারের নমুনা সংগ্রহ করা হয়। তার স্ত্রীর নেগেটিভ আসলেও শিক্ষক ও তার ছেলের পজিটিভ এসেছে।
সোনাইমুড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ডা: মো. রিয়াজ উদ্দিন জানান, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের গুদাম রক্ষক (৩৫) এর করোনা শনাক্ত হয়েছে। তিনি করোনায় আক্রান্ত উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: মাইনুল ইসলামের সংস্পর্শে এসেছিলেন। গত ৭ মে তার নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য প্রেরণ করা হয়। তিনি বর্তমানে ঢাকা রিজেন্ট হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এ ঘটনায় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কমপাউন্ডের তিনটি ভবন লকডাউন করা হয়েছে।
সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: মাহাবুবুর রহমান জানান, উপজেলার অশ^দিয়া ইউনিয়ন এলাকার ৩৯ বছর বয়সী এক গৃহীনি করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। গত ৫মে তার নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য প্রেরণ করা হয়। তিনি বর্তমানে হোম আইসোলেশনে আছেন। এ ঘটনায় তার বাড়িটি লকডাউন করা হয়েছে। এছাড়াও মঙ্গলবার দুপুরে সদর উপজেলার শ্রীপুরে (৫৫)এক ব্যক্তি ও উত্তর ফকিরপুর এলাকার বাসিন্দা ও সদর হাসপাতালের কর্মচারী (৫০) এর করোনা শনাক্ত হয়েছে। এ দুটি নমুনা সদ্য চালু হওয়া নোয়াখালী আব্দুল মালেক উকিল মেডিকেল কলেজ এবং নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ল্যাবে পরীক্ষার পর শনাক্ত হয়েছে।
উল্লেখ্য, জেলায় মোট করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৫৮জন। যার মধ্যে জেলার বেগমগঞ্জে ২৪জন, সদরে ১০জন, সোনাইমুড়ীতে ১০জন, হাতিয়ায় ৫জন, সেনবাগে ১জন, কবিরহাটে ২জন, চাটখিলে ৫জন ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় ১জন। এদের মধ্যে মারা গেছেন সোনাইমুড়ীতে মোরশেদ আলম (৪৫) নামে এক ইতালি প্রবাসী, সেনবাগে এক রাজমেস্ত্রী মো. আক্কাস (৪৮) ও বেগমগঞ্জে তারেক হোসেন (৩০) নামের এক ব্যবসায়ী। জেলায় মোট করোনা মুক্ত হয়েছেন ৯জন।