দলের চেয়ারপারসনসহ অন্যদের মনোনয়নপত্র বাতিলের কড়া সমালোচনার করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ বলেছেন, নির্বাচন বানচালের জন্য সরকার দেশব্যাপী ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে। ক্ষমতার মৌতাতে বুঁদ হয়ে থাকার জন্যই অবৈধ শাসকগোষ্ঠী আসন্ন নির্বাচন নিয়ে মাস্টারপ্ল্যানে ব্যস্ত আছে।
রোববার দুপুরে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন রুহুল কবির রিজভী আহমেদ।
রিজভী আহমেদ বলেন, ‘তফশীল ঘোষণার শুরু থেকেই নির্বাচনের পরিবেশ যেন আরও অবনতিশীল হয়েছে। নৌকার পক্ষে হালে পানি না পাওয়ায় বিএনপিসহ বিরোধীদলের মনোনয়নপ্রত্যাশী ও নেতাকর্মীদের শুধুমাত্র মিথ্যা মামলা দায়ের ও গ্রেফতার করেই সরকারের সাধ মিটছে না; এখন তাদের ভিটে-মাটিতে ঘু ঘু চরিয়ে দিতে তারা সর্বশক্তি নিয়োগ করেছে।’
সারাদেশে প্রার্থীসহ বেছে বেছে বিএনপির সক্রিয় নেতাকর্মী ও সমর্থকদের গ্রেফতার করা হচ্ছে, গুম করা হচ্ছে-এমন অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘প্রার্থীসহ নেতাকর্মী ও সমর্থকদের বাড়িতে বাড়িতে হামলা চালচ্ছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং আওয়ামী সন্ত্রাসীরা। আর এসব কিছু নেপথ্য থেকে নিয়ন্ত্রণ করছে দুটি শক্তিশালী কেন্দ্র -একটি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও অন্যটি গণভবন। নির্বাচন কমিশন “হুকুম-বরদার” মাত্র। কমিশন শুধু ওই দুই কেন্দ্রের সহযোগী হিসেবে কাজ করছে।’
রিজভী আহমেদ মনে করেন, জনগণকে ভোট থেকে দূরে রাখার জন্য তারা পরিকল্পিতভাবে ভোটের পরিবেশ বিনষ্ট করার পাঁয়তারা করছে। পুলিশসহ আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে সরকারি দলের অনাচারের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলার ঘটনা থেকেই মনে হয়-তারা ভোটারদের ভীতিগ্রস্ত করতে চায়। বাংলাদেশের ইতিহাসে নির্বাচনের সময় এমন ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি আগে কখনও দেখা যায়নি। সুপরিকল্পিত মাস্টারপ্ল্যানের অংশ হিসেবেই এসব করা হচ্ছে নৌকাকে জালিয়াতির মাধ্যমে বিজয়ী করার জন্য।
বিএনপির এই যুগ্ম মহাসচিবের ভাষ্য, নির্বাচন কমিশন হয় অন্ধ না হয় কানা। প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ কতিপয় কমিশনার সরকারের পক্ষে নিজেদের নিয়োজিত রেখেছেন। নির্বাচন কমিশন, পুলিশ প্রশাসন, আইন-আদালত, বিচারিক প্রক্রিয়া সবকিছুর ওপরই সরকার যেন ‘সিন্দাবাদের জিন’র মতো সওয়ার হয়ে আছে। দেশের বিভিন্ন জেলায় রিটার্নিং অফিসার বা সহকারি রিটার্নিং অফিসারের কাছে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রাপ্ত প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র জমা দিতে গেলে দেখা গেছে, তাদের দু’পাশ ঘিরে আছেন পুলিশের দুজন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা। অর্থাৎ পুলিশ কর্মকর্তারা সুস্পষ্টভাবে জানিয়ে দিলেন, তারা আওয়ামী লীগের পক্ষে। অথচ এক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশন উদাস কবির মতো আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকল, নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের জন্য কোনো ব্যবস্থা নিল না।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, সহ-দফতর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু, বেলাল আহমেদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।