নোয়াখালীর বার্তা ডটকমঃ নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী উপজেলার বারগাঁও ইউনিয়নের নির্বাচনে ঘোষিত ফলাফল পাল্টে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীকে জেতানোর অভিযোগ উঠেছে।

বুধবার (৬ জানুয়ারি) রাতে উপজেলার কাশিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে।

প্রাপ্ত ফলাফলে দেখা যায়, ওই কেন্দ্রে বৈধ এক হাজার ৭৭১ ভোটের মধ্যে আবদুর রাজ্জাক (মোটরসাইকেল) পেয়েছেন ১৯৫ ভোট, মো. জহিরুল ইসলাম জনি (হাতপাখা) ৫৮ ভোট, মো. নুরুনবী (আনারস) এক ভোট, মো. নূরুল আলম মোল্লা (টেলিফোন) ২৭ ভোট, মো. নুরুল ইসলাম (রজনীগন্ধা) পাঁচ ভোট, মো. সামছুল আলম (নৌকা) এক হাজার ২৭১ ভোট, শহীদ উল্যাহ (ঘোড়া) চার ভোট ও সাইয়েদ আহমদ (চশমা) ২১০ ভোট পেয়েছেন।

কিন্তু ঘোষিত এ ফলাফল পাল্টে ঘষামাজা করে রাতে নতুন ফল ঘোষণা করা হয়। এতে মোটরসাইকেল প্রতীকের আবদুর রাজ্জাক ও চশমা প্রতীকের সাইয়েদ আহমদের একশ করে ভোট কমিয়ে নৌকা প্রতীকের মো. সামছুল আলমের দুইশ ভোট বাড়িয়ে এক হাজার ৪৭১ ভোট করা হয়।

অভিযোগকারী প্রার্থী সাইয়েদ আহমদ (চশমা) একই কেন্দ্রের দুটি ফলাফল দেখিয়ে জানান, ‘বুধবার রাত ৮টায় ১০ কেন্দ্রের ফলাফলে আমাকে জয়ী ঘোষণা করা হয়। কিন্তু রাত সাড়ে ৮টায় ফলাফলপত্র ঘষামাজা করে আমাকে ১১ ভোটে পরাজিত দেখিয়ে নৌকাকে জয়ী ঘোষণা করা হয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে রিটার্নিং কর্মকর্তা সোনাইমুড়ী কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার মো.বরকত উল্যাহ, ওই কেন্দ্রর প্রিসাইডিং কর্মকর্তা আম্বরনগর উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক এ বি এম নোমানসহ দায়িত্বপ্রাপ্তরা এমন কারসাজি করেছেন।’

এ বিষয়ে তাৎক্ষণিক রিটানিং কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ করেও কোনো প্রতিকার পাননি ভুক্তভোগী সাইয়েদ আহমদ। এখন জেলা প্রশাসকসহ উচ্চ আদালতে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন তিনি।

সোনাইমুড়ী উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. শেখ ফরিদ বলেন, ওই ইউনিয়নে রিটার্নিং কর্মকর্তা আমি নই। তাই এ নিয়ে কোনো কথা বলতে চাচ্ছি না।

তবে এ বিষয়ে জানতে সোনাইমুড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ফজলুর রহমান, বারগাঁও ইউনিয়নের রিটার্নিং কর্মকর্তা মো.বরকত উল্যাহ, প্রিসাইডিং কর্মকর্তা এ বি এম নোমানকে বার বার ফোন করা হলেও কেউ রিসিভ করেননি।

জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. রবিউল আলম বৃহস্পতিবার (৬ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় জানান, ‘বিষয়টি শুনেছি। এ বিষয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ করা হয়েছে। এর বেশি আমি কিছু বলতে পারবো না।’

ঘটনার ২৪ ঘণ্টা পর এক কর্মদিবস গেলেও জেলা কর্মকর্তা হিসেবে বিষয়টি এড়িয়ে যাচ্ছেন কেন? জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং ও প্রিসাইডিং কর্মকর্তারা জবাব দিবেন।’

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ খোরশেদ আলম খান বলেন, ‘এ ঘটনায় কেউ আমাকে লিখিত বা মৌখিকভাবে জানায়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’