নোয়াখালীর বার্তা ডটকমঃ নোয়াখালী আব্দুল মালেক উকিল সরকারি মেডিকেল কলেজে স্থাপিত ল্যাবরটরিতে শুক্রবার থেকে করোনা ভাইরাস টেস্ট শুরু হতে যাচ্ছে। প্রতিদিন পরীক্ষা করা হবে ৯৬ জনের নমুনা। তবে প্রথম পর্যায়ে এ ল্যাবে সীমিত আকারে পরীক্ষা করা হবে। নোয়াখালী ছাড়াও পাশ্ববর্তী লক্ষ্মীপুর ও চাঁদপুর জেলার লোকজনের নমুনা এখানে পরীক্ষা করা হবে। এতে করে করোনাভাইরাসের নমুনা পরীক্ষার দীর্ঘ সূত্রতার অবসান হবে বলে আসা করা যাচ্ছে।

মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. আবদুস সালাম জানান, করোনাভাইরাসের লক্ষণ থাকা ব্যক্তির শরীর থেকে রক্ত ও নমুনা সংগ্রহ করে এ ল্যাবে টেস্ট করা হবে। এ ক্ষেত্রে জেলা করোনা ভাইরাস প্রতিরোধ কমিটির অনুমোদন লাগবে। করোনাভাইরাস কমিটির সভাপতি নোয়াখালী জেলা প্রশাসক তন্ময় দাস ও সদস্য সচিব সিভিল সার্জন ডা. মোমিনুর রহমান। তবে সরাসরি কেউ এ ল্যাবে এসে করোনাভাইরাস পরীক্ষার সুযোগ পাবেন না। সংশ্লিষ্ট জেলার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মাধ্যমে নমুনা সংগ্রহ করে করোনা টেস্ট করানো যাবে। সংশ্লিষ্ট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মাধ্যমে প্রতিদিনের করোনা ভাইরাসের রিপোর্ট প্রকাশ করা হবে।

স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (সাচিপ) নোয়াখালী জেলা শাখা সভাপতি ও নোয়াখালী আব্দুল মালেক উকিল মেডিকেল কলেজের কিডনি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. ফজলে এলাহী খান এবং সাচিপ সাধারণ সম্পাদক ডা. মাহবুবুর রহমান বলেন, ইতোমধ্যে মেডিকেল কলেজ ল্যাবে করোনাভাইরাস পরীক্ষার জন্য প্রাথমিকভাবে ২৪টি কিট সরবরাহ পাওয়া গেছে। এর আগে মেডিকেল কলেজের ল্যাবে প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি স্থাপন করা হয়েছে। ল্যাবে ৮টি টিম কাজ করবে। বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার সহায়তায় স্বাস্থ্য বিভাগের অধীন করোনাভাইরাস পরীক্ষার জন্য সারাদেশে স্থাপিত ল্যাবগুলোর মধ্যে নোয়াখালীর মেডিকেল কলেজের ল্যাবটি ২৯তম।

জেলা সিভিল সার্জন ডা. মোমিনুর রহমান জানান, এ মেডিকেল কলেজে নোয়াখালী ছাড়াও লক্ষ্মীপুর ও চাঁদপুর জেলার রোগীরা করোনাভাইরাস পরীক্ষা করার সুযোগ পাবেন। করোনায় আক্রান্ত রোগীদের জন্য ইতোমধ্যে জেলার শহীদ ভুলু স্টেডিয়ামে ৮২ শয্যার পৃথক দুইটি আইসোলেশন ইউনিট স্থাপন করা হয়েছে। শুক্রবার থেকে সেখানে রোগী ভর্তি করা যাবে।

জেলার করোনা ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি ও নোয়াখালী জেলা প্রশাসক তন্ময় দাস বলেন, শুক্রবার থেকে মেডিকেল কলেজে করোনাভাইরাস পরীক্ষার কার্যক্রম চালু হবে। শহীদ ভুলু স্টেডিয়মে আইসোলেশন ইউনিট খোলা হয়েছে। এখানে দায়িত্ব পালনের জন্য চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মী নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের বহনের জন্য একটি অ্যাম্বুলেন্স এবং চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মীদের বহনের জন্য একটি গাড়ির ব্যবস্থা করা হয়েছে। এদের থাকার জন্য স্টেডিয়ামের সামনে মা-মনি জেনারেল হাসপাতালকে নির্ধারণ করা হয়েছে। এখানে ১জন চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী ৭দিন করে কাজ করবেন এবং পরবর্তী ১৪ দিন হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকবেন।

তিনি আরও বলেন, এছাড়াও বেসরকারিভাবে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে করোনাভাইরাস পরীক্ষার উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে। এ নিয়ে বৃহস্পতিবার (৩০ এপ্রিল) সকালে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে নোয়াখালী-৪ আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক একরামুল করিম চৌধুরীসহ একটি সভা হবে। নোবিপ্রবির ল্যাবে করোনাভাইরাস পরীক্ষা শুরুর বিষয়ে ওই সভায় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে।