

সাইফুল ইসলাম রিয়াদ: নোয়াখালীর চাটখিল উপজেলা ও পৌরসভা বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির আহবায়ক কমিটি গঠিত হয়েছে।
৮ সেপ্টেম্বর রাত ১২ টায় নোয়াখালী জেলা বিএনপির আহবায়ক মাহবুব আলমগীর আলো এবং সদস্য সচিব মো: হারুনুর রশিদ আজাদ স্বাক্ষরিত এডভোকেট আবু হানিফকে আহবায়ক ও জিএস ফরিদ কে সদস্য সচিব করে ৪৮ সদস্য বিশিষ্ট চাটখিল উপজেলা বিএনপি এবং মোস্তফা কামালকে আহবায়ক ও আহছানুল হক মাসুদকে সদস্য সচিব করে ৫৩ সদস্য বিশিষ্ট চাটখিল পৌরসভা বিএনপির কমিটি অনুমোদন দেওয়া হয়।
অভিযোগ উঠেছে, বিগত স্বৈরাচার আওয়ামিলীগ সরকারের সময় আন্দোলন সংগ্রাম, হামলা-মামলা, জেল জুলুম এর শিকার সক্রিয় ত্যাগী নেতাদেরকে পদ বঞ্চিত করা হয়েছে। ত্যাগীদের মধ্যে যারা কমিটিতে স্থান পেয়েছে তাদেরকেও সঠিক মূল্যায়ন করা হয়নি।
ঘোষিত কমিটির অধিকাংশ ব্যক্তি বিগত ১৭-১৮ বছর দেশে বা দলীয় কর্মসূচিতে না থেকেও অর্থের বিনিময় কমিটিতে পদ ভাগিয়ে নিয়েছে।
এ নিয়ে তৃণমূল নেতাকর্মীদের মাঝে চরম ক্ষোভ ও অসন্তোষ দেখা দেয়। কমিটি প্রচার হইতে দলের অভ্যন্তরে এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সমালোচনার ঝড় বইছে।
কমিটি প্রচারের পর থেকে সোশ্যাল মিডিয়ায় বিএনপি’র দেশ বিদেশে থাকা নেতাকর্মীরা জেলা বিএনপির কমিটির বিরুদ্ধে মোটা অংকের টাকা বিনিময়ে এই কমিটি দেওয়ার অভিযোগ তুলে বিভিন্ন রকম পোস্ট করে যাচ্ছে।
উপজেলা বিএনপির সাবেক সদস্য সচিব ও নতুন কমিটির ১ নং যুগ্ন আহবায়ক শাহজাহান রানা কমিটি ঘোষণা পরবর্তী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মন্তব্য করেছেন এখন চাটখিলের বিএনপি চালাবে জাতীয় পার্টি আর আওয়ামী লীগের দালালরা।
চাটখিল পৌরসভা বিএনপি’র সাবেক আহ্বায়ক দেওয়ান শামসুল আরেফিন শামীম তার প্রতিক্রিয়ায় বলেন বর্তমান কমিটিতে ত্যাগী ও পরীক্ষিত নেতাকর্মীদের মূল্যায়ন করা হয় নাই। নতুন কমিটিতে পদ পেতে মোটা অংকের টাকা পয়সা লেনদেনের গুঞ্জনের বিষয়ে তার কাছে জানতে তিনি বলেন, আপনাদের মত আমিও মোটা অংকের লেনদেনের একটি গুঞ্জন শুনে আসছি তবে কমিটিতে ত্যাগী ও পরীক্ষিত নেতাকর্মীদের মূল্যায়ন না করায় সাংগঠনিক কাঠামো ভেঙ্গে পড়তে পারে।
উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহবায়ক আলাউদ্দিন ভূঁইয়া বলেন, বিগত আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকারের সময়ে যারা দলের হাল ধরে আন্দোলন সংগ্রামের রাজপথে ছিল এবং জেল জুলুম নির্যাতনের শিকার হয়েছে তাদেরকে বাদ দিয়ে সম্পূর্ণ অরাজনৈতিক কিছু হাইব্রিড ব্যক্তিদের কে নিয়ে এই কমিটি করা হয়েছে যাহা থেকে বোঝা যায় এই কমিটিতে মোটা অংকের অর্থনৈতিক লেনদেনের বিনিময়ে হয়েছে।
উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহবায়ক এড. মোহাম্মদ হোসেন পিন্টু বলেন এই কমিটি মোটা অংকের অর্থ বাণিজ্য ও আত্মীয়তার সম্পর্কের কারণে হয়েছে। যারা বিগত দিনের আন্দোলন সংগ্রামে মিছিল মিটিংয়ে ছিল না, অতীতে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের কোন পদে ছিল না, তাদেরকে পদায়ন করা হয়েছে কিন্তু্ু তৃণমূল ত্যাগী পরীক্ষিত কর্মী যারা রাজপথে ছিল তাদেরকে পদ বঞ্চিত করা হয়েছে, আবার কেউ কেউ বিদেশে বসেও পদ পেয়েছে যাহা খুবই হাস্যকর।
আক্ষেপ করে পৌরসভা বিএনপি নেতা আবুল কাশেম মিন্টু বলেন, যারা বিগত আওয়ামীলীগ সরকারের এমপি মন্ত্রীদের সাথে সখ্যতা ছিল, ছবি ছিল, নৌকা মার্কার পক্ষে ভোট করেছে, তাদেরকে এই কমিটিতে পদায়ন করা হয়েছে। এই ব্যাপারে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জনাব তারেক রহমান ও বিএনপি’র কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের হস্তক্ষেপ কামনা করে বলেন, অবিলম্বে অর্থ বাণিজ্যের বিষয়ে তদন্তপূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানান।
নোয়াখালী জেলা বিএনপির আহবায়ক মাহবুব আলমগীর আলো এবং সদস্য সচিব মো: হারুনুর রশিদ আজাদের মোবাইলে ফোন দিয়ে এবং এসএমএস করেও অর্থ বানিজ্যের অভিযোগ ও অনিয়মের বিষয়ে কোন উত্তর পাওয়া যায়নি।