নোয়াখালীর বার্তা ডটকমঃ লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলার হাজীপুর পাটোয়ারীর বাড়িতে শ্রক্রবার রাতের তাফসিরুল কোরান মাহফিলে মাওলানা মিজানুর রহমান আযাহারীর কাছে হিন্দু পরিচয়ে কালেমা পাঠ করিয়ে মুসলমান হওয়ায় সেই ১১জনকে শনিবার রাতে পুলিশ হেফাজতে নিয়েছে রামগঞ্জ থানা পুলিশ। অভিযোগ উঠেছে মা ইছাপুর ইউপির মেম্বার,নিজে ভারত-বাংলাদেশের দ্বৈত নাগরিত,তিন সন্তান মাদ্রাসাতে পাঠদান,বড় মেয়েকে ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী ৩ বছর আগে বোনের ছেলের কাছে বিয়ে দেওয়ার পরেও মাহফিলে সবাইকে হিন্দু পরিচয়ে দিয়ে মুসলমান হওয়ার ঘটনায় উপজেলাব্যাপী সর্ব মহলে ব্যাপক আলোচনা সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে।
সুত্রে জানাযায়, উপজেলার ৪নং ইছাপুর ইউনিয়ন পরিষদের সংরক্ষিত মহিলা সদস্য নারায়নপুর গ্রামের ডাক্তার আঃ হাই বাড়ীর মোসাম্মদ ফাতেমা বেগমের ছেলে মনির হোসেন (৩৯) কয়েক বছর পুর্বে ভারতে যায়। সেখানে গিয়ে একটি বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস করে এবং চাচাতো ও জেঠাতো দুই বোনকে বিয়ে করে। মনির হোসেনের প্রথম স্ত্রী রেখা অধিকারীর সংসারে মরিয়ম বেগম, শ্যাফালী বেগম, মারিয়া আক্তার, নুসরাত জাহান, জান্নাত আক্তার এবং দ্বিতীয় স্ত্রী সুজাতা অধিকারীর সংসারে আঃ করিম, আয়েশা আক্তার ও আবদুল্লাহর জম্ম হয়। ভারত থাকাবস্থায় মনির হোসেন তার বড় মেয়ে শ্যাফালী বেগমকে বাংলাদেশে বোন পারভিন বেগমের ছেলে পারভেজ হোসেনের সাথে বিয়ে দেয়। কয়েক মাস পুর্বে মনির হোসেন পরিবারের সবাইকে নিয়ে দেশে ফিরে ঢাকার কেরানীগঞ্জ উপজেলার শুভাঢ্যা গ্রামে বসবাস শুরু করেন। পরে সেই ইউনিয়ন পরিষদ থেকে (১১ডিসেম্বর-২০১৯ সালে) মুসলমান হিসেবে দুই স্ত্রী ও সন্তানদের জম্ম নিবন্ধন তৈরি করেন। শুধু মনির হোসেন নিজে (১৯ অক্টোবর ২০১৯ সালে) রামগঞ্জ উপজেলার ইছাপুর ইউনিয়ন পরিষদ থেকে জম্ম নিবন্ধন করেন।
রামগঞ্জ উপজেলার ৫নং চন্ডিপুর ইউনিয়ন পরিষদ মেম্বার মোঃ ইব্রাহিম মিয়া বলেন,মনির হোসেন ইছাপুর ইউপির সংরক্ষিত মেম্বার ফাতেমা বেগমের বড় ছেলে এবং দক্ষিন নারায়নপুর আঃ হাই ডাক্তার বাড়ির মজিবুল হকের ছেলে হলেও কয়েক মাস যাবত হরিশ্চর গ্রামের হাফেজ আয়াত উল্যাহর বসত ঘরে ভাড়া থাকতো। তার দুই কন্যা জান্নাত ও আয়েশা আক্তার হরিশ্চর দাখিল মাদ্রাসার ৫ম শ্রেনীর এবং ছেলে আব্দুল্লাহ বর্তমানে নুরানী মাদ্রাসাতে পাঠদান করছে।
গ্রামের লিটন হাজারী সহ কয়েকজন বলেন, ১১ জনের মুসলমান নিবন্ধন থাকার পরও শুক্রবার মিজানুর রহমান আজহারী মাহফিলে মনির হোসেনকে সংকর অধিকারী, তার স্ত্রী রেখা অধিকারী ও সুজাতা অধিকারী, সন্তান মরিয়মকে মিতালী, শ্যাফালীকে শ্যাফালী বেগম, মারিয়াকে রুপালী, নুসরাতকে কোয়েল, জান্নাতকে শ্যামলী, আঃ করিমকে রাজা, আয়েশা কে সুমা, আবদুল্লাকে রাজেস এবং নাতী আঃ রহমানকে সুর্য দেখিয়ে ধর্মান্তর ঘোষনা দেয়।
এব্যাপারে জানতে চাইলে মনির হোসেন বলেন, আমি ভারতে থাকাবস্থায় সংকর অধিকারী পরিচয় দিতাম। দেশে ফিরে পুর্বের পরিচয় দিয়ে একটি অটোরিক্সা চালিয়ে দুই স্ত্রী ও সন্তানদের নিয়ে জীবন-যাপন করছি।
মাহফিল পরিচালনা কমিটির আহবায়ক ও রায়পুর এল এম হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক মাহবুবুর রহমান বলেন, তারা যে আগে থেকেই মুসলমান ছিল এ বিষয়ে আমাদের জানা ছিল না। মাহফিলের পরে বিষয়টি আলোচনা আসার পরে বিস্মিত হয়েছি। পুলিশ ওদের আটক করে হেফাজতে রেখেছে। বিভিন্ন সংস্থা তদন্ত করছে। এই মুহুর্তে আমি বেশি কিছু বলতে পারবো না।
অপরদিকে ধর্মান্তরিত পরিবারের সদস্যরা দাবি করেছেন, মনির এক সময়ে মুসলমান থাকলেও সে ভারতে যাবার পর হিন্দু ধর্মীয় রিতীতে চলে যায় তাই তাকে পূনঃরায় মুসলমান হতে হয়েছে।
রামগঞ্জ থানা অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন জানান, ঘটনা প্রকাশ পাওয়ার পর ১১জনকে পুলিশ হেফাজতে রাখা হয়েছে। বিষয়টি রাষ্ট্রের সিন্ধান্তের উপর ভিত্তি করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়ায় নেওয়া হবে।