নোয়াখালীর বার্তা ডটকমঃ আইসিইউতে হাত-পা বেঁধে নোয়াখালীর শিশু নাদিয়াকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাটি ঘটেছে ২৫ জুন বিকেলে ঢাকার ৬৯/ ডি গ্রীনরোড পান্থপথ পুরাতন গ্যাষ্টোলিভার ভবনের ইউনিহেলথ স্পেশালাইজ হাসপাতালে। এদিকে নাদিয়ার বাবার একটি ভিডিও ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলে গণমাধ্যমকর্মীদের নজরে আসে। গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে প্রেরিত ছবিতে আইসিইউতে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় দেখা যায় নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলার ১ নং চর জব্বর ইউনিয়নের চর রশিদ গ্রামের নাদিয়া নামে ১ বছরের শিশুকে ।
নাদিয়া বাবা মোঃ নাছির উদ্দিন জানান, গত ১৯ জুন আমার মেয়ের কপালের উপর একটি পোড়া উঠতে দেখি , পরের দিন সকালে মেয়ে যখন ঘুম থেকে উঠে তখন দেখা যায় তার বাম চোখ লাল এবং পুলে আছে সে সাথে তার ডায়েরিয়া দেখা দেয় । ২৩ জুন মেয়ের অবস্থা খারাপ দেখে আমি রাত ১ টার সময় নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে মেয়েকে ভর্তি করি ।
২৪ তারিখে ডিউটি ডাক্তার ওয়ার্ডে এসে ঔষধ লেখার ১ ঘন্টা পর ডাঃ লিয়াকত আলী মুন্সি আমাকে ডেকে বলে আপনার মেয়ে হার্টফেল করেছে তাকে আইসিইউতে ভর্তি দিতে হবে তাই তাকে ঢাকা নিতে হবে । তৎক্ষনাত আমি একটা এ্যাম্বুলেন্সে করে তাকে ঢাকা নিয়ে যাই। সেখানে গিয়ে বেলা ১ টার সময় ঢাকা শিশু হাসপাতালে ভর্তি করি । ভর্তির পর ডিউটি ডাঃ নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতাল থেকে নেওয়া কেইস সামারি দেখে আমাকে বলে মেয়েকে আইসিইউতে ভর্তি রাখতে হবে এবং আইসিইউতে ভর্তি দিতে হলে আপনি ফাইলে সই করতে হবে কারণ আপনার মেয়ে মারা গেলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দায়ী থাকবেনা । কিছুক্ষন পর হাসপাতালের লোকজন আমাকে বলে এই হাসপাতালে আইসিইউ নেই আপনার মেয়েকে অন্য হাসপাতালে নিতে হবে। তখন তারা আমাকে ৬৯/ ডি গ্রীনরোড় পান্থপথ পুরানা গ্যাষ্টোলিভার ভবন ঢাকা-১২০৫, ইউনিহেলথ স্পেশালিইজ হাসপাতাল লিঃ দেখিয়ে দেন । ঔদিন আছরের পর আমার মেয়েকে আইসিইউতে ভর্তি দিয়ে আমরা সেখান থেকে চলে যাই । পরের দিন সকাল ১০ টার সময় আমরা হাসপাতালে উপস্থিত হলে আমাদেরকে রুগী দেখার অনুমতি দেওয়া হয় । আমরা ভিতরে গিয়ে দেখি আমার মেয়েকে একটি নরমাল রুমে রাখা হয়েছে।আর আমার মেয়ের হাত-পা বাঁধা মুখে মাক্স লাগানো । তা দেখে আমি আমার মোবাইলে ছবি উঠিয়ে নিয়ে এবং কর্তৃপক্ষকে হাসপাতাল থেকে সিট কাটার জন্য বললে তারা সিট কাটতে রাজি হননি । আমি ঢাকার বড় বড় হাসপাতাল গুলোতে যোগাযোগ শুরু করলে আমার হাতে নোয়াখালী থেকে নেওয়া কেইচ সামারি দেখে সবাই বলে আপনার রুগীর করোনা টেষ্ট নেগেটিভ সাটিফিকেট লাগবে । তা না হলে ভর্তি করা যাবেনা । ২৫ জুন আছরের পর আমাকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ঢেকে বলে আপনার মেয়ে মারা গেছে তখন আমি হতভম্ব হয়ে পড়ি এবং আমার স্ত্রীকে সবুর করার জন্য বলি । কিছুক্ষণ পর হাসপাতালের ছাড় পত্র আমার হাতে আসলে দেখি তাতে ৪০ হাজার টাকা তাদের বিল এসেছে, তখন আমি তাদেরকে বললাম আমিতো বিভিন্ন টেষ্টে করার জন্য ২০ হাজার টাকা আপনাদেরকে দিয়েছি ৪০ হাজার টাকা কিভাবে বিল আসে? তারা কেউ আমার সাথে কথা বলতে রাজি হননি । তাদের সম্পুর্ণ বিল পরিশোধ করে আমি আমার মেয়েকে নিয়ে নোয়াখালীর আমার গ্রামের বাড়ীতে এনে দাফন কাজ সমাপ্ত করি ।
নাছির উদ্দিন বলেন , ২৮ জুন বিকালবেলা আমার মোবাইলে একটি মেসেজ আসে আমি মোবাইলের মেসেজটি পড়ে দেখি তাতে লেখা আছে আপনার মেয়ের করোনা নেগেটিভ ।
তিনি আরো বলেন,আমি চাই না এই ভাবে অবহেলায় আর কোন মা বাবার বুক খালি হোক , প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রী পরিষদের কাছে আমার আকুল আবেদন বাংলাদেশের স্বাস্থ্য বিভাগটা আরো সেবা মুলক হিসাবে পরিচালনা করা হোক ।