নোয়াখালীর বার্তা ডটকমঃ নোয়াখালীর কবিরহাট উপজেলার রামেশ্বরপুর গ্রামে ২০১০ সালে ছোটভাই সামছুদ্দিন ইলিয়াছকে হত্যার দায়ে বড় ভাই ইউছুফ আলী ওরফে মানিককে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। মঙ্গলবার বিকালে জেলা ও দায়রা জজ সালেহ উদ্দিন আহমদ এ আদেশ দেন।
আদালতের আদেশে যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি ইউছুফ আলীকে ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ডও দেওয়া হয়েছে। সাজাপ্রাপ্ত আসামি ইউছুফ আলী পলাতক রয়েছেন।
মামলার অপর চার আসামি মৃত মাহবুল হক ওরফে মাস্টার, এনামুল হক ওরফে এনাম, মানিক ওরফে জামাই মানিক ও আবদুল করিমকে এ হত্যা মামলা থেকে বেকুসুর খালাস দেওয়া হয়।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, সামছুদ্দিন ইলিয়াছ উচ্ছৃঙ্খল জীবনযাপন করতেন। নিয়মিত মদ, গাঁজা সেবন করে পরিবারের সদস্যদের ওপর নির্যাতন চালাতেন। নির্যাতন থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার জন্য তাকে একাধিকবার কারাগারে ও মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রে পাঠিয়েও তার চারিত্রিক কোন পরিবর্তন ঘটেনি। এসব বিষয়ে ক্ষুব্ধ হয়ে ছোট ভাই সামছুদ্দিন ইলিয়াছকে হত্যার পরিকল্পনা করেন মাদকাসক্ত বড় ভাই ইউছুফ আলী মানিক। ২০১০ সালের ১০ আগস্ট রাতে ঘুমন্ত অবস্থায় শ্বাসরুদ্ধ করে সামছুদ্দিন ইলিয়াছকে হত্যা করেন তার বড় ভাই যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ইউছুফ আলী মানিক।
সূত্র জানায়, হত্যার পর পারিবারিকভাবে ডাকাতির ঘটনায় খুনের ঘটনাটি ঘটেছে বলে ইউছুফ আলীসহ অন্যরা প্রচার করেন। এ কারণে পরিবারের কেউ এ ঘটনায় থানায় মামলা করতে রাজি হননি। পরে কবিরহাট থানার উপপরিদর্শক (এসআই) রবিউল হক বাদী হয়ে থানায় একটি মামলা করেন। যার প্রেক্ষিতে পুলিশ সন্দেহভাজন আসামি হিসেবে ভাই ইউছুফ আলী ও মাহবুল হক ওরফে মাস্টারকে গ্রেপ্তার করলে তারা দোষ স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দেন।
আদালতের স্টেনোগ্রাফার মাসুদ রানা বলেন, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা একই থানার এসআই মামুনুর রশিদ পাটোয়ারী মামলার তদন্ত শেষে চারজন আসামির বিরুদ্ধে একই বছরের ১২ অক্টোবর আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। আদালত ১৩ জন সাক্ষীকে পরীক্ষা করেন। দীর্ঘ শুনানি, সাক্ষ্যগ্রহণ ও যুক্তিতর্ক শেষে আদালত মামলার রায় ঘোষণা করেন। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন সরকারি কৌঁসুলী গুলজার আহমেদ জুয়েল। আসামি পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন আবদুল কাদের।