নোয়াখালীর বার্তা ডটকমঃ নোয়াখালীর চাটখিল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের গাইনী বিশেষজ্ঞ ডাঃ তিথি আজিজের ভুল চিকিৎসা শিকার হয়ে, রুপা বেগম নামে এক নারী বর্তমানে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে। ডাঃ তিথি আজিজ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক হলেও, তিনি রুপাকে (দ্বিতীয় সিজার) অপারেশন করেন চাটখিল শিশু কিশোর স্পেশালিস্ট হসপিটালে।
রুপা বেগম নামের এই প্রসূতি মায়ের ভুল সিজার অপারেশনের ঘটনাটি ঘটে গত ১ জুন বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে,চাটখিল শিশু কিশোর স্পেশালিষ্ট হসপিটালে।
ঘটনার বিবরণে এবং রোগীর স্বজনদের সাথে যোগাযোগ করে জানা গেছে, রুপা বেগমের প্রসাব বেদনা উঠলে পূর্ব থেকে নির্ধারিত চাটখিল শিশু কিশোর স্পেশালিস্ট হসপিটাল এ নিয়ে আসা হয়। এখানে আনার পর তারা পেশার সহ অন্যান্য পরীক্ষা-নিরীক্ষা সম্পূর্ণ না করেই অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যায়। সিজার অপারেশনে রুপা বেগম একটি কন্যা সন্তানের জন্ম দেয়। ভুল সিজার অপারেশনের কারণে রোগীর প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়। রক্ত বন্ধ না করেই তড়িঘড়ি করে, কোন রকম সেলাই করে রোগীকে মাইজদীতে স্থানান্তর করা হয়।
তাদের পরামর্শ মতে রূপা বেগমকে মাইজদীতে প্রাইম হাসপাতালসহ একাধিক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলেও কোন হাসপাতালে তাকে ভর্তি করতে রাজি হয়নি। রোগীর অবস্থা বেগতিক দেখে তার স্বজনেরা কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে নেওয়ার পর অনেক অনুরোধের পর তাকে ভর্তি করা হয়। সেখানে নেওয়ার পর রুপাকে দ্বিতীয় অপারেশন করা হয়। বর্তমানে রুপা বেগম কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে রয়েছেন।
এদিকে বিষয়টি জানাজানি হয়ে গেলে চাটখিল শিশু-কিশোর স্পেশালিস্ট হসপিটাল সাথে জড়িত প্রভাবশালীরা ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার জন্য মরিয়া প্রচেষ্টা চালায়। হাসপাতাল থেকে রুগীর স্বজনদের লোভনীয় অফার দেওয়া হয়েছে। সাংবাদিকদের কাছে কোন কথা না বলার জন্য রোগীর স্বজনদের সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে। চাটখিল শিশু কিশোর স্পেশালিস্ট হসপিটালের সাথে সংশ্লিষ্টরা চাচ্ছে কিছু টাকা দিয়ে রোগীর আত্মীয় স্বজনের মুখ বন্ধ করে দিতে। এবং এরা এ পথে হাঁটছে বলে একাধিক সুত্র থেকে দৈনিক নয়া বঙ্গবাজার জানতে পেরেছে।
ডাঃ তিথি আজিজের একের পর এক ভুল অপারেশনের বিষয় জানতে চাইলে চাটখিল উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ মোস্তাক আহমেদ, ডাঃ তিথি আজিজ এর পক্ষ নিয়ে কথা বলেন। তার বক্তব্য হচ্ছে তিথি আজিজ কোন ভুল করতে পারে না। ডাঃ আজিজের হাতে বেশ কয়েকজন প্রসূতি মায়ের মৃত্যু ও অনেক মায়ের মাতৃত্ব হারা হওয়ার বিষয় প্রশ্ন করা হলে, ডাঃ মোস্তাক আহমেদ সড়ক দুর্ঘটনার সাথে চিকিৎসা সেবা তুলনা করেন।
এ বিষয়ে মন্তব্য জানার জন্য ডাঃ তিথি আজিজের মোবাইল ফোনে বেশ কয়েকবার কল করা হলে ও তিনি তা রিসিভ করেননি। উনার মন্তব্য জানতে চেয়ে হোয়াটসঅ্যাপে ক্ষুদে বার্তা পাঠানো হলেও কোন সাড়া পাওয়া যায়নি।
এ ব্যাপারে চাটখিল শিশু কিশোর স্পেশালিস্ট হসপিটালের সাথে যোগাযোগ করা হলে কর্তব্যরত কর্মকর্তারা বলেন, রুপা বেগমকে সন্ধ্যা ছয়টার দিকে আমাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। রাত ৯টার দিকে তাকে অপারেশন থিয়েটার নিয়ে যাওয়া হয়। সিজার অপারেশনটি খুব সুন্দর ভাবে সম্পন্ন হয়েছিল এবং একটি কন্যা সন্তান হয়। উনার পেশার একটু বেশি থাকায ডাক্তার রুপাকে মাইজদীতে নিয়ে যাওয়ার জন্য বলেছে। অন্য কোন সমস্যার কথা হাসপাতাল থেকে অস্বীকার করা হয়।
এ বিষয়ে রোগীস্বজনেরা সাংবাদিকদের আরো বলেন ভুল চিকিৎসার মেডিকেল সার্টিফিকেট সংগ্রহ করে খুব দ্রুত সময় আদালতে মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে তারা।
উল্লেখ্য,এদিকে ডাঃ তিথি আজিজের ভুল চিকিৎসার শিকার হয়ে অনেক নারী মাতৃত্ব হারিয়েছেন। অনেক মাতৃত্ব হারানো নারীর তথ্য আমাদের হাতে এসে পৌঁছেছে এবং আরো আসছে।
শারমিন আক্তার স্বামী মোঃ জহির উদ্দিন পলাশ গ্রাম:মলংমুড়ি। প্রথম সিজার অপারেশনের সময় জরায়ু কেটে পেলে ডাঃ তিথি আজিজ।
২০২০ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর আমেনা বেগম নামের এক নারীকে সিজার করতে গিয়ে হত্যা করা সহ বেশ কিছু অভিযোগ রয়েছে ডাক্তার ডাঃ তিথি আজিজ এর বিরুদ্ধে।