নোয়াখালীর বার্তা ডটকমঃ তেহরানে বিমান ভেঙে পড়ার ঘটনায় এ বার ভিন্ন সুর শোনাল ইউক্রেন। ঘটনার পর পরই প্রাথমিক প্রতিক্রিয়ায় তেহরানের ইউক্রেনীয় দূতাবাস জানিয়ে দেয় ‘যান্ত্রিক ত্রুটি’র কারণেই এই দুর্ঘটনা। তবে, এর কিছুক্ষণের মধ্যেই পিছু হাঁটে কিয়েভ। বিমান দুর্ঘটনায় নাশকতার আশঙ্কার কথা উড়িয়ে দেননি ইউক্রেনের প্রধানমন্ত্রী ওলেকসি হঞ্চারুক। ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতেও বিমানটি বিধ্বস্ত হয়ে থাকতে পারে বলে শঙ্কা প্রকাশ করা হচ্ছে।
বুধবার ওলেকসি হঞ্চারুককে বিমান দুর্ঘটনার কারণ নিয়ে প্রশ্ন করেন সাংবাদিকরা। ততক্ষণে অবশ্য তেহরানে থাকা ইউক্রেনের দূতাবাস জানিয়ে দিয়েছে ওই দুর্ঘটনার জন্য দায়ী বিমানের ইঞ্জিন। এ দিন সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে, নাশকতার আশঙ্কা উড়িয়ে দেননি ইউক্রেনের প্রধানমন্ত্রী। ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ে ওই বিমানটিকে নামানো হতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন হঞ্চারুক। তবে, এ নিয়ে মন্তব্যে অবশ্য সাবধানী কিয়েভ। তদন্ত না শেষ হওয়া পর্যন্ত কোনও রকম সিদ্ধান্ত টানতে নিষেধ করেছেন ইউক্রেনের প্রধানমন্ত্রী।
এ দিকে দুর্ঘটনাগ্রস্ত বিমানের ব্ল্যাক বক্স বিমানটির প্রস্তুতকারক সংস্থা বা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হাতে তুলে দেয়া হবে না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছে তেহরান। তেহরানের বেসামরিক বিমান পরিবহণ সংস্থার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এটা স্পষ্ট নয় যে তদন্তের জন্য কোনো দেশের হাতে বিমানের ব্ল্যাক বক্স যাবে। ওই দুর্ঘটনার কারণ ইরানের বেসামরিক বিমান পরিবহণ সংস্থাই তদন্ত করবে বলে জানিয়ে দিয়েছে তেহরান। তবে তদন্তের সময় ইউক্রেনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত থাকতে পারেন বলে জানিয়েছে ইরান।
মার্কিন ড্রোন হামলায় ইরানি জেনারেল কাসেম সোলাইমানির মৃত্যুর পর থেকেই উত্তেজনায় ফুটছে পশ্চিম এশিয়ার ওই অংশ। মঙ্গলবার ইরানের কেরমানে সোলাইমানির দাফন সম্পন্ন হওয়ার কয়েক ঘণ্টা আগেই ইরাকের আল আসাদ এয়ার বেস ও ইরবিলে মার্কিন ও যৌথ বাহিনীর ঘাঁটি লক্ষ্য করে অন্তত ১৫টি মিসাইল ছোঁড়ে তেহরান। তাতে অন্তত ৮০ জন ‘মার্কিন জঙ্গি’র মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি করেছে ইরানের স্টেট মিডিয়া।
বুধবার সাত সকালে তেহরানের ইমাম খামেনিই বিমানবন্দর থেকে রওনা দিয়েছিল ওই বিমানটি। এর পরেই সেটি ভেঙে পড়ে। মৃত্যু হয় বিমানে থাকা ১৭৬ জনের। ঘটনার পর পরই তড়িঘড়ি তেহরানে থাকা ইউক্রেনের দূতাবাসের তরফে জানানো হয়, যান্ত্রিক ত্রুটির কারণেই ওই বিমানটি ভেঙে পড়েছে। এর কিছুক্ষণের মধ্যেই অবশ্য ওই মন্তব্য প্রত্যাহার করে নেয়া হয়। তার বদলে ইউক্রেনের প্রধানমন্ত্রী যে ইঙ্গিত দিয়েছেন তা উসকে দিয়েছে ২০১৪ সালে ইউক্রেনের দনেতস্ক এলাকায় মালয়েশিয়ান বোয়িং বিমানের ভেঙে পড়ার স্মৃতি। পরবর্তী কালে ওই ঘটনার তদন্তে জানা যায়, এমএইচ-১৭ নামে ওই বিমানটি বিইউকে ক্ষেপণাস্ত্রের মাধ্যমে ধ্বংস করে দেয় দনেতস্ক এলাকার বিদ্রোহীরা। ওই নাশকতার ঘটনায় মৃত্যু হয় ২৯৮ জনের।
সূত্র : সংবাদ সংস্থা