হাসিব আল আমিনঃ ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের এমবিবিএস কোর্সের প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষায় মেধাক্রমে ৩৭৯৫তম হয়ে শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজ জামালপুরে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন মিরাজ। ভর্তি পরীক্ষায় ১০০ নম্বরের মধ্যে তিনি পেয়েছেন ৬৯.৫ নম্বর। তবে অভাবের সংসারে তাঁর মেডিকেলে পড়া হবে কিনা, তা নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছিল। মো. মিরাজের মেডিকেলে ভর্তির দায়িত্ব নিয়েছেন নোয়াখালীর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ খোরশেদ আলম খান। এখন আর তাঁর মেডিকেল ভর্তি নিয়ে শঙ্কা নেই।

মো. ফিরোজ উদ্দিন ও মালেকা বেগমের দুই ছেলে ও তিন মেয়ের মধ্যে দ্বিতীয় সন্তান মো. মিরাজ এ বছর এইচএসসি পরীক্ষায় নোয়াখালী ন্যাশনাল মডেল কলেজ থেকে বিজ্ঞান বিভাগে জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হন।

তাদের বাড়ি নোয়াখালী সদরের দক্ষিন চর শুল্লাকিয়া গ্রামের চাঁদ মিয়া বাড়িতে। তারা বাবা ইটভাটায় দিনমজুরের কাজ করেন। দিনশেষে যা রোজগার, তা দিয়েই চলে সংসার। মিরাজের মা মালেকা বেগম গৃহিণী। তার বড় ভাই রিয়াজ উদ্দিন পড়ালেখার পাশাপাশি টিউশনি করে চালাচ্ছেন তার পড়ালেখার খরচ।

সোমবার (১২ এপ্রিল) দুপুরে নোয়াখালী জেলার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ খোরশেদ আলম খান মিরাজ ও তাঁর পরিবারের হাতে মেডিকেলে ভর্তির ৩৫ হাজার টাকা তুলে দেওয়া হয়।

মিরাজ বলেন, ‘আমি মেডিকেলে ভর্তি নিয়ে চিন্তায় ছিলাম। এখন আমার ভর্তির চিন্তা কেটেছে। আল্লাহর দুনিয়ায় ভালো মানুষের অভাব নেই। জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ খোরশেদ আলম খান স্যার আমার মেডিকেলে ভর্তি ফী ও বইপত্রের খরচ হিসেবে ৩৫ হাজার টাকা দিয়েছেন। তিনি আশ্বাস দিয়েছেন আমার পড়াশোনায় আর্থিক সহযোগিতা করার।’

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ খোরশেদ আলম খান বলেন, আমি মানবিক বিষয়টি বিবেচনা করে মিরাজের মেডিকেলে ভর্তি ও পড়াশোনার দায়িত্ব নিয়েছি। তাদের আর্থিক অবস্থার বিস্তারিত জেনে নিজ উদ্যোগে মিরাজের পরিবারের হাতে ৩৫ হাজার টাকা দিয়েছি।’

মোহাম্মদ খোরশেদ আলম খান আরো বলেন, ‘আমি দোয়া করি মিরাজ একদিন মানবিক ডাক্তার হয়ে দেশের অসহায় মানুষগুলোর পাশে দাঁড়াবে। মিরাজের মেডিকেলে পড়াশোনায় আর্থিক সহায়তা করব।’ এসময় তিনি সরকারি প্রকল্পের আওতায় মিরাজের মাকে দুধের গাভী কিনে দেওয়ার আশ্বাস দেন।