সশস্ত্র সংগঠন হিজবুল্লাহর বিরুদ্ধে নতুন সামরিক অভিযান শুরু করেছে ইসরাইল। লেবানন ও ইসরাইলকে সংযুক্ত করতে হিজবুল্লাহর খোঁড়া টানেল বা সুড়ঙ্গগুলো ‘খুঁজে বের করে অকেজো করার জন্য অভিযান’ শুরু হয়েছে মঙ্গলবার।
ইসরাইলের সেনাবাহিনী তাদের টুইটার একাউন্টে অভিযানে শুরু করার কথা জানায়।
ইসরাইলি সেনাবাহিনীর মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট কর্নেল জোনাথন কোনরিকাস বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানান, এই অভিযান শুধু সীমান্তের এপাশে ইসরাইলের অংশে চলবে। তারা লেবাননে প্রবেশ করে কোনও কিছু করবে না।
‘আমরা হিজবুল্লাহ’র কার্যক্রম ইসরাইলের কর্তৃত্বের নিদারুণ ও ভয়ানক লঙ্ঘন বলে বিবেচনা করি,’ রয়টার্সকে বলেন তিনি।
এক টুইটে ইসরাইলি সেনাবাহিনীর মুখপাত্র আভিচেয় আদ্রায়ি বলেন, লেবাননের সরকার এসব টানেল তৈরির জন্য দায়ী এবং লেবাননের জনগণকে তারা ঝুঁকির মুখে ফেলছে।
হিজবুল্লাহ এই সামরিক অভিযানের বিষয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া দেয়নি।
তবে লেবাননের নিউজ পোর্টাল তায়ার জানিয়েছে, লেবাননের দক্ষিণ সীমান্তে কেফারকেলা ও আদাইসসেহ গ্রামের বিপরীতে দিকে ইসরাইলের অংশে খনন শুরু করেছে দেশটির সেনাবাহিনী।
ইসরাইলের এ ধরনের অভিযান বিরল ঘটনা বলে মন্তব্য করেন কাতারের আলজাজিরার প্রতিবেদক নাতাশা ঘোনেইম।
‘২০০৬ সালে ইসরাইলের সঙ্গে হিজবুল্লাহ’র যুদ্ধের পর থেকে আমরা দক্ষিণে এ ধরনের অভিযান দেখেনি। হিজবুল্লাহ ও ইসরাইলের মধ্যে উত্তেজনাপূর্ণ যুদ্ধবিরতি চলছে,’ বলেন তিনি।
গত রাতে ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী অপ্রত্যাশিতভাবে ব্রাসেলসে উড়ে যান মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেওকে এই অভিযান সম্পর্কে অবহিত করতে।
‘এই সময় নির্ধারণটাও গুরুত্বপূর্ণ, কারণ মাত্র তিনদিন আগে ইসরাইলের পুলিশ ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত করার সুপারিশ করেছে,’ বলেন ঘোনেইম।
তিনি আরও বলেন, নেতানিয়াহু জনপ্রিয় হলেও, এই অভিযানকে কেউ কেউ সন্দেহের চোখে দেখছেন। নেতানিয়াহু তার আইনি সমস্যা থেকে মানুষের মনোযোগ সরিয়ে দিতে হিজবুল্লাহ’র বিরুদ্ধে শুরু করেছেন বলে সন্দেহ করছেন তারা।
২০০৬ সালে সীমান্ত এলাকার যুদ্ধে এগারশ’রও বেশি লেবানিজ, যাদের বেশীরভাগই বেসামরিক এবং ১৫৯ ইসরাইলি নিহত হন।
ওই যুদ্ধে সশস্ত্র শিয়া দল মাটিতে ইসরাইলের আক্রমণ রুখে দিতে সক্ষম হয় এবং সামরিক ও বেসামরিক লক্ষ্যে আঘাত হানে। তখন থেকেই সিরিয়ার যুদ্ধে হিজবুল্লাহ বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। ইসরাইলের সঙ্গেও তাদের সম্পর্কে টানটান উত্তেজনা বিরাজ করছে।
সিরিয়ার যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর ইসরাইল সেখানে ২০০-এরও বেশি বিমান হামলা করার দাবী করেছে।