নোয়াখালীর বার্তা ডটকম: নোয়াখালীর চাটখিল উপজেলার পৌর বাজারের মহাসড়ক, সড়ক ও সড়কের পাশের ফুটপাতের ওপরে স্থায়ী দোকান বসিয়ে মোটা অংকের ভাড়া নিচ্ছেন বাজারের ব্যবসায়ীরা। ব্যবসায়ী ছাড়াও সড়ক ও ফুটপাতের ওপরে গড়ে উঠা এসব দোকানদার বাজারের ইজারাদারকে চাঁদা দেওয়ার পাশাপাশি আরো কয়েক পক্ষকে খুশি রেখে দোকান পরিচালনা করতে হয়। যে কারণে দেখা যায় ফুটপাত ও রাস্তা দখল করে বসা এসব দোকানের ভাড়া মার্কেটের দোকানের চেয়ে কোনো অংশেই কম নয়।
মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) চাটখিল পৌরবাজার ঘুরে দেখা যায় মহাসড়ক থেকে চিপা রাস্তা সবখানেই এসব এসব দোকানদার স্থায়ী ছোট ছোট ঝুপড়ি ঘর নির্মাণ করে ব্যবসা পরিচালনা করছেন৷ কোথায় কেউ কেউ আবার চৌকি বিছিয়ে বসছেন। রাস্তার উভয় পাশে স্থাপিত এসব দোকানের কারণে রাস্তার একাংশ দখল হয়ে গেছে। দখলের পর যে অংশ খালি থাকে, সেখানে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ক্রেতারা পণ্য কিনছেন। দেখে রাস্তাকে মনে হবে জমজমাট কোনো মার্কেট।
এসব ভিড় ঠেলে বাজারের এক ডজনের বেশি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীকে যাতায়াত করতে হয়। হাসপাতালগামী রোগীদের পাঁচ মিনিটের রাস্তা পার হতে এক ঘন্টারও বেশি পার হয়ে যায়। এক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়তে হয় নারী ও কম বয়সী শিক্ষার্থীদেরকে।
চাটখিল পৌরবাজারের একজন ক্রেতা সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘ফুটপাত দেখলে বাজারে কোনো অভিভাবক আছে বলে মনে হয় না। সর্বত্র একধরণের বিশৃঙ্খলা দেখা যায়। যে কারণে এই বাজারে এখন আর আগের মতো ক্রেতারা আসেন না। অনেকেই মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন। তাছাড়া মোটা অংকের ভাড়ার বিনিময়ে যেখানে সেখানে কাঁচামালের দোকান গড়ে উঠছে। যা বাজারের পরিবেশ আরো নোংরা করে ফেলেছে।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সড়কের উপর দোকান করে কাঁচামাল বিক্রি করা একজন বলেন, ‘আমি যে দোকানের সামনের রাস্তায় বসি, সে দোকানদারকে প্রতিদিন ৩০০ টাকা করে দেই। প্রথমবার জায়গাটা নিজের দখলে আনার জন্যও টাকা লাগছে। বাজারের ইজারা নিয়েছে যে, তারাও টাকা নেয়। আগে পৌরসভাও টাকা নিতো, রাজনীতি করা লোকেরাও টাকা নিতো।’
গত ০৯ অক্টোবর সাংবাদিক, ব্যবসায়ী, ছাত্র ও বিভিন্ন শ্রেণি পেশার নাগরিকরা চাটখিল পৌর বাজারের যানজট নিরসন, ফুটপাত দখল মুক্তকরণ, অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনার নিয়ে চাটখিল পৌর প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার শেখ এহসান উদ্দীন এর সাথে জরুরি এক সভা করেন। সেই সভায় এসব সমস্যা সমাধাণের জন্য তাদের দাবী তুলে ধরেন। তবে এখন পর্যন্ত দৃশ্যমান কোনো কাজ লক্ষ করা যায়নি। এরইমধ্যে রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় এসব অবৈধ দোকানদার ও তাদের সুবিধাভোগী শ্রেণি বিভিন্ন অফিসে দৌড়ঝাঁপ শুরু করছেন।
এই বিষয়ে জানতে চাইলে চাটখিল পৌর প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার শেখ এহসান উদ্দীন বলেন, ‘সড়ক সরকারি জায়গা। সেটা ব্যবসায়ী, দোকানদার কিংবা অন্য কোনো পক্ষ ভাড়া দেওয়ার কেনো অধিকার নেই। এটা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। শীঘ্রই আমরা এই বিষয়ে ব্যবস্থা নিবো। রাস্তায় চলাচলে বাঁধা সৃষ্টি হয়, এমন কিছুই রাখতে দেওয়া হবে না। আমরা সবাইকে নিয়ে পৌরবাজারকে শৃঙ্খলার মধ্যে নিয়ে আসার চেষ্টা করছি।