নির্বাচনে বিএনপি নেতাকর্মীদের এলাকাছাড়া করতে মামলা ও তল্লাশির নামে হয়রানি করে টেকনাফ মডেল থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাশ বিতর্কিত এমপি আবদুর রহমান বদির এজেন্ডা বাস্তবায়ন করছেন বলে অভিযোগ তুলেছেন কক্সবাজার জেলা বিএনপির সভাপতি ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঐক্যফ্রন্ট মনোনীত প্রার্থী শাহজাহান চৌধুরী।
শনিবার (১ ডিসেম্বর) দুপুরে জেলা বিএনপি কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে শাহজাহান চৌধুরী এ অভিযোগ করেন। সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের স্বার্থে ‘বিতর্কিত’ ওসি প্রদীপকে শিগগিরই প্রত্যাহার করার দাবিও জানান তিনি।
তিনি বলেন, বিগত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বিএনপি মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী ও উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আবদুল্লাহ, জেলা বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য সুলতান আহমদ বিএ এবং ওমর হাকিম মেম্বারসহ সিনিয়র নেতাকর্মীদের বাড়িতে গিয়ে এমপি বদি নিজেই প্রাণনাশের হুমকি দিয়েছেন। ওসি প্রদীপ কুমার দাশের পরিকল্পনায় নিজেরাই ঘটনা সাজিয়ে বিএনপিকে দমন নিপীড়নের চেষ্টা করছেন।
তিনি বলেন, শুক্রবার দিবাগত রাতে টেকনাফের হোয়াইক্যংয়ে স্থানীয় এমপি আব্দুর রহমান বদির গাড়িতে হামলা, ভাঙচুরের ঘটনাটিও সেই পরিকল্পনারই একটি অংশ, সাজানো নাটক। এমপি বলছেন রাস্তার পাশের ঝোপ থেকে আক্রমণ করা হয়েছে। এমপির বহরে সামনে পেছনে গাড়ি ছিল। রাস্তার পাশ থেকে গুলি করলে তা সাইডে না লেগে পেছনে লাগার কারণ কি? তাহলে কি তার পেছনে থাকা গাড়ি থেকেই আক্রমণটা করা হয়েছে? পরিস্থিতিতো এটাই বলে। এরপরও এমন ঘটনা অনভিপ্রেত ও নিন্দনীয় বলে দাবি করেন শাহজাহান চৌধুরী।
তার মতে, দলীয় নেতাকর্মীদের মাঠছাড়া করতে এবং নির্বাচনী ফায়দা লুটতে ঘটনাটি ঘটানো হয়েছে। এ ঘটনার জের ধরে ওসি প্রদীপের নেতৃত্বে টেকনাফ উপজেলা যুব দলের সাধারণ সম্পাদক জোনায়েদ আহমদ চৌধুরীর বাড়িতে শুক্রবার দিবাগত রাত দেড়টায় পুলিশ ব্যাপক তল্লাশি, ভাঙচুর ও লুটতরাজ চালায়। পরে জোনায়েদ চৌধুরীকে খুঁজে না পেয়ে অশালীন গালমন্দ করেন। এছাড়া পরিধেয় মূল্যবান পোশাক, স্বর্ণালঙ্কার ও নগদ টাকাও লুট করে নিয়ে যায় পুলিশ।
বিএনপি প্রার্থীর অভিযোগ, আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য আব্দুর রহমান বদি ও তার পরিবারের অন্তত ২৫ জন রাষ্ট্রীয় তালিকায় শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী। পুলিশি নিরাপত্তায় এসব মাদক ব্যবসায়ীকে সঙ্গে নিয়ে নির্বাচনী প্রচারণায় নেমেছেন বদি।
মাদক ব্যবসায়ীদের গ্রেফতার নিশ্চিত করে এলাকায় নির্বাচনী পরিবেশ সৃষ্টির দাবি করেন শাহজাহান চৌধুরী। অন্যথায় উদ্ভুত রাজনৈতিক পরিস্থিতির সকল দায়দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট প্রশাসন ও নির্বাচন কমিশনকে বহন করতে হবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে জেলা বিএনপির সহসভাপতি কুতুবদিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এটিএম নুরুল বশর চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট শামীম আরা স্বপ্না, দফতর সম্পাদক ইউসুফ বদরী, জেলা শ্রমিক দলের সভাপতি রফিকুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট আবদুল মন্নান, অ্যাডভোকেট আবু ছিদ্দিক ওসমানীসহ বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।